লাল পাহাড়ে কর্মমুখী শিক্ষার উৎসব

 

মহিউদ্দিন মোল্লা॥

কোটবাড়ির লালমাই। কুমিল্লার প্রাচীন শিক্ষা নগরী। ১৪শত বছর আগে এখানে গড়ে উঠে শিক্ষাঙ্গন। যার অন্যতম শালবন বৌদ্ধ বিহার। কুমিল্লা নগরীর দক্ষিণ পশ্চিমে কোটবাড়ি অবস্থিত। এখানে এখনও ডজন খানেকের বেশি নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়,কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজ ও কুমিল্লা পলিটেক ইনস্টিটিউট। এখানে কর্মমুখী শিক্ষার নতুন আয়োজন রয়েছে কোটবাড়ি ময়নামতি জাদুঘরের পশ্চিমে লালমাই পাহাড়ের চৌধুরী এস্টেট এলাকায়। সিসিএন শিক্ষা পরিবার কর্মমুখী শিক্ষা নিয়ে কাজ করছে। সেখানে রয়েছে সিসিএন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট,সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,সিসিএন মডেল কলেজ ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কোর্স।

 

সরেজমিন কোটবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,শালবন বৌদ্ধ বিহারের মসজিদের দক্ষিণ পাশ ঘেঁষে রাস্তা এঁকেবেঁকে প্রবেশ করেছে পাহাড়ের দিকে। পাশে শালবন সুন্দরের পসরা বসিয়েছে। পথে লালমাই উদ্ভিদ উদ্যান। উদ্যানের পরে রাস্তার দুই পাশে টিলা। টিলার গায়ে কচুর ছড়া আর সবজি চাষে ব্যস্ত কৃষক। সামনে এগুলো সবুজে মোড়ানো ক্যাম্পাস। লালমাই পাহাড় আর সমতলের ৩৫ একর ভূমিতে সিসিএন শিক্ষা পরিবার। চারদিকে সবুজের উৎসব। কান এসে লাগে পাখির কিচিরমিচির শব্দ। বাতাসে বন্য ফুলের ঘ্রাণ আর সবুজের সতেজতা ভাসছে। একই ক্যাম্পাসে সব গুলো প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানের কক্ষে কর্মমুখী শিক্ষার নানা উপকরণ।

সূত্রমতে,বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলে সিসিএন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রথম বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠানটি নগরীর রামঘাটলায় ২৯জন শিক্ষার্থী দিয়ে যাত্রা শুরু করে। ২০১৫সালে এই অঞ্চলে প্রথম প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। এছাড়া ২০১৮সাল থেকে এসইআইপি প্রজেক্টের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা হচ্ছে। পলিটেকনিক থেকে এই পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি শিক্ষার্থী পাশ করে বের হয়েছে। তাদের ৯৬ ভাগ কর্মে যোগ দিয়েছে। তারা কর্মরত রয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্পে,মেট্রোরেল প্রজেক্টে,মাতারবাড়ি বিদ্যুত কেন্দ্রে,দেশের বাইরে সিঙ্গাপুর,মালেয়শিয়া,আমেরিকা,ইতালি নিউজিল্যান্ড ও সৌদি আবরসহ বিভিন্ন দেশে।

সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ব্যাংকে,আইন পেশায় নিযুক্ত হয়েছে।

সিসিএন শিক্ষা পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা মো. তারিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জনসংখ্যাকে জনশক্তিতে রুপান্তরিত করতে বেসরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট চালু করি। প্রথমে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। মানুষ এই শিক্ষা নিয়ে সচেতন ছিলো না। শিক্ষার্থী পাওয়া যেতো না। অনেকে মনে করতেন কম মেধাবীরাই এখানে পড়তে আসে। সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। কারিগরি শিক্ষা নিয়ে তরুণদের বেকারত্ব দূর হচ্ছে। এখন আমাদের প্রতিষ্ঠানে ৫৪ জেলার শিক্ষার্থীরা পড়ছে। তিনি আরো বলেন,এটা দেখে ভালো লাগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমাদের শিক্ষার্থী প্রশিক্ষিত হয়ে মাথা তুলে কাজ করছে। দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে অবদান রাখছে।

কুমিল্লার নির্মাণ প্রতিষ্ঠান গোল্ড সিলভার হোমসের সত্ত্বাধিকারী মো. ফারুক আহমেদ বলেন,আমাদের প্রশিক্ষিত জনবলের খুব সংকট। দেশে বিদেশে দক্ষ জনবলের খুব চাহিদা রয়েছে। সিসিএন শিক্ষা পরিবার দক্ষ জনবল তৈরিতে কাজ করছে। যা দেশের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।