লাল ফলে রঙিন চান্দিনার মাঠ

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
পিঙ্করোজ। উপরে গোলাপী ভেতের টকটকে লাল। ফলটি কাটার পর মাঠে ছড়িয়ে পড়ে লাল রঙের ঝিলিক। খাওয়ার পর মুখে লেগে থাকে মিষ্টি সুগন্ধ স্বাদ। ফলটির নাম ড্রাগন। কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার ভোমরকান্দি গ্রামের মাঠজুড়ে ড্রাগনের আধিপত্য। এখানে কামরুল হাছান খান সেলিম ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে ২একর জমিতে ড্রাগনের চাষ করেছেন। ৭বছর আগে তিনি ৩৯লাখ টাকা ব্যয়ে এই চাষ শুরু করেন। বিক্রি করেছেন ৪৮লাখ টাকার ফল। আগামী বছর গুলোতে শ্রমিক ও সার ছাড়া তেমন ব্যয় হবে না। আরো ২০ বছর এই বাগান থেকে ফল তুলতে পারবেন। আগামীতে প্রতি বছর লাভ পাবেন ১৫লাখ টাকার মতো।
বাগানে গিয়ে দেখা যায়, খান এগ্রো ফার্মের গেইট পেরিয়ে বড় ড্রাগনের বাগান। পাকা ফলে পাখি বসেছে। সেগুলো তাড়ানোর চেষ্টা চলছে। মাঠে কাজ করছেন কামরুল হাছান খান সেলিমের ছোট ভাই কেফায়েত উল্লাহ খান ও কবিরুল ইসলাম খানসহ শ্রমিকরা। তাদের সঠিকভাবে মাঠ পরিচর্যার পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার নাঈমা হক তন্বী ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন।
কবিরুল হাছান খান বলেন, এই এলাকায় আমরা প্রথম ড্রাগনের চাষ শুরু করি। দুই একর জমিতে চার হাজার গাছ আছে। এপ্রিলে ফল সংগ্রহ শুরু করি তা অব্যাহত থাকে নভেম্বর পর্যন্ত। প্রথমে অনেকে দেখতে এসে বলতেন-এগুলো কি লাগাচ্ছেন উল্টাপাল্টা। পরে ফল দেখে খেয়ে ভালো লেগেছে। এখন তারাও আমাদের থেকে চারা নিয়ে চাষ শুরু করেছেন। আমাদের পাশের নবাবপুর ও রানীরচড়া গ্রামেও ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়েছে।
প্রতিবেশী মহসিন মিয়া বলেন,এই উদ্যোক্তারা আমাদের প্রতিবেশী চাচা। তাদের বাগানের ফলের সুনাম রয়েছে। তারা ফল বিক্রি করে ভালো আয় করছেন। আমরাও চাষ করবো বলে পরিকল্পনা করেছি।
ফলের ক্রেতা মো.মনিরুজ্জামান বলেন.এখানে ড্রাগন ফলে কোন ক্যামিকেল দেয়া হয় না। সেটা শুনে চান্দিনা থেকে এসেছি। ফল কিনে খেয়ে দেখেছি, বেশ সুস্বাদু।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোরশেদ আলম বলেন,চান্দিনা উপজেলায় সাড়ে ৫একরের বেশি জমিতে ড্রাগনের চাষ হচ্ছে। জোয়াগ ইউনিয়ন,পৌর এলাকা,মাইজখারসহ বিভিন্ন স্থানে ড্রাগনের বাগান রয়েছে। তার মধ্যে বড় প্রকল্প হচ্ছে মাইজখার ইউনিয়নের ভোমরকান্দির এই বাগানটি। কিছু বাগানির টনিক ব্যবহারের বদনাম রয়েছে তবে তিনি তা ব্যবহার করেন না। এতে তাদের চাহিদাও প্রচুর। আমরা তাদেরকে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি। তাকে দেখে এরকম উদ্যোক্তা হতে পাশের কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন। তরুণরা উদ্যোক্তা হয়ে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারেন।
