বোরকা পরে যুবলীগ নেতাকে গুলিতে হত্যা
প্রতিনিধি ।।
কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুরে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেনকে বোরকা পরে গুলি করা ব্যক্তিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের নাম-পরিচয়ও জানা গেছে। শুটাররা কেউ দেশে আছেন, কেউ বিদেশে পালিয়ে গেছেন। সোমবার কুমিল্লা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান। এদিকে গত দুই দিনে র্যাব ও পুলিশ তিনজনকে করে ৬জনকে গ্রেফতার করেছে। তবে এই আসামিরা বোরকা পরে গুলি করা তিনজনের বাইরে।
তিনি জানান, এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত, তবে এজাহারভুক্ত আসামি নয়, এমন তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকা-ে ব্যবহৃত হাইয়েস গাড়ি, একটি বোরকা ও জুতা। গ্রেফতার করা হয়- তিতাসের জিয়ারকান্দি গ্রামের মো. রবি (৩৩), একই গ্রামের মো. শাহ পরান(৩২) ও হাইয়েস গাড়ি চালক লালপুর গ্রামের মো. সুমন হোসেন (২৭)।
এ কর্মকর্তা জানান, হত্যাকা- সংঘটিত হওয়ার স্থান গৌরিপুর বাজার থেকে শুরু করে তিতাসের জিয়ারকান্দি পর্যন্ত সবগুলো স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। বোরকা পরা অস্ত্রধারীরা যে গাড়িতে করে গৌরিপুর আসেন এবং পালিয়ে যান, সে হাইয়েস গাড়ির চালক সুমনকে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। সুমনের তথ্যমতে তার চান্দিনার ভাড়া বাসার সামনে থেকে হাইয়েস গাড়িটি জব্দ করা হয়। তার বাসা তল্লাশি করে দুই জোড়া জুতা ও ঘটনার সময় তার পরিহিত ট্রাউজার উদ্ধার করা হয়। অপর দুই আসামি শাহপরান ও রবিকে ঢাকার মালিবাগ চৌধুরীপাড়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। শাহপরান ঘটনার আগে ও পরে ঢাকা থেকে আসামিদের সাথে যোগাযোগ করে। তাদেরকে আত্মগোপনে যাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা করে। শাহপরান মামলার এজাহারভুক্ত পলাতক ৮ নম্বর আসামি অলি হাসানের ভায়রা। অপর আসামি রবি ৯ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামি কালা মনিরের ভাই। সে ঘটনাস্থলের আশেপাশে থেকে আসামিদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করে। তার দেওয়া তথ্যমতে একটি বোরকা ও হিজাব ( নেকাব) উদ্ধার করা হয়। সুমন ছাড়া বাকি দুই আসামির বিরুদ্ধে একটি করে মামলা রয়েছে।
পুলিশ সুপার আরো জানান, এ ঘটনায় বহু আসামি সম্পৃক্ত রয়েছে। তদন্তে অনেকের নাম বেরিয়ে আসছে। যে তিনজন শুটার, তাদের পরিচয় তদন্তের স্বার্থে এখনই বলা যাচ্ছে না। পুলিশের পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা জড়িতদের শনাক্তে কাজ করছে। আমরা র্যাবের হাতে গ্রেফতার তিনজন ও আমাদের হাতে গ্রেফতার তিনজনের সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করব।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( অপরাধ) আশফাক হোসেন, সহকারী পুলিশ সুপার ( সদর সার্কেল) কামরান হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, রবিবার (৩০ এপ্রিল) রাত ৮টার দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরিপুর বাজারে হত্যা করা হয় জেলার তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জামাল হোসেনকে। তিনজন বোরকা পরিহিত ব্যক্তি তাকে গুলি করে হত্যা করেন। জামাল হোসেন তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। তিতাস উপজেলা বাড়ি হলেও তিনি ব্যবসা করতেন পাশের দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর বাজারে। বাজারের পাশে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। জামাল হোসেন হত্যাকা-ের তিনদিনের মাথায় দাউদকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেন তার স্ত্রী পপি আক্তার। মঙ্গলবার (২ মে) রাতে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় নয়জনকে এজাহারনামীয় ও সাত-আটজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com