এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে চাচা-ভাতিজার সম্পত্তির দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষে দু'পক্ষের দুইজন নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হন অপর পাঁচজন। এদিকে এই ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বিশুতারা গ্রামের চাচা আজাদ মিয়া ও ভাতিজা ইনসান মিয়ার লোকদের মধ্যকার সংঘর্ষে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতেরা হলেন, বিশুতারা গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে আজাদ মিয়া (৫৫) এবং তার প্রতিপক্ষ ভাতিজা ইনসান মিয়ার পক্ষের আমানত মিয়া (৬০)। আমানত মিয়া একই গ্রামের মিছির আলী ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বিশুতারা গ্রামে একটি ভিটেবাড়ি নিয়ে চাচা আজাদ মিয়ার সঙ্গে ভাতিজা ইনসান মিয়ার বিরোধ চলছিলো দীর্ঘদিন ধরেই। এরই জের ধরে মঙ্গলবার ভোরে আজাদ মিয়ার ওপর ইনসান মিয়া ও তাঁর লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। রাম দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপানো হয় আজাদ মিয়াকে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।এরপরই আজাদ মিয়ার পক্ষের লোকজন ইনসান মিয়ার পক্ষের ওপর হামলা চালায়। ভাঙচুর চালানো হয় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে। হামলাকারীরা বল্লম দিয়ে গুরুতর আঘাত করে আমানত মিয়াকে। বল্লমাঘাতে গুরুতর আহত আমানত মিয়াকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের পরিবার জানান, আজাদ মিয়ার পক্ষের লোকজন ইনসান মিয়ার পক্ষের লোক দাবি করেই আমানত মিয়ার ওপর বল্লম দিয়ে হামলা চালায়। অপরদিকে এই ঘটনায় আহত অপর পাঁচজনকে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে দেয়া হয়েছে চিকিৎসা।
সরাইল থানা পুলিশ নিহত আজাদ মিয়া ও আমানত মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার দুপুর নাগাদ পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িতের দায়ে চারজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। আটককৃতরা হলেন ঘাতক ইনসান মিয়ার ভাই (বিশুতারা গ্রামের) ইমরান ও আরমান, একই গ্রামের শাহজাহান আলীর ছেলে সাইফুল ইসলাম ও আবুল কাসেম মিয়ার ছেলে তাবারক মিয়া। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
সহকারি পুলিশ (সরাইল সার্কেল) সুপার তপন সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, 'খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে পাঠানো হয় মর্গে। এদিকে ঘটনার সাথে জড়িতের দায়ে চারজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।'