মহিউদ্দিন আকাশ।।
ছোটকাল থেকে পাখি ধরা তার নেশা। তাই স্কুল থেকে বাড়ি ফিরেই গ্রামের বন-জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতেন। কুমিল্লার চান্দিনার ফতেহপুর গ্রামের আবদুল কাদের। এক সময় স্বপ্ন দেখতেন বাসায় পাখি পুষবেন। তাই ২০২০ সালে করোনা মহামারির শুরুতে শখের বসে ৫ জোড়া কবুতর কিনেন। বাড়ির ছাদে পোষা শুরু করলেন। এক সময় এক জোড়া, দু'জোড়া করে তার কবুতরের সংখ্যা বাড়তে লাগলো।
তিনি জানান, করোনাকালে ঢাকায় চাকরি সাময়িক বন্ধ থাকায়, বাড়ি চলে যান। মূলত অবসর সময় কাটাতেই তার এ চিন্তা। তবে সময়ের ব্যবধানে এর প্রতি তার আরও নেশা বেড়ে যায়। তাই তার সব চিন্তাই কবুতর পালনকে ঘিরেই। কিভাবে এর সম্প্রসারণ করা যায় এটিই যেন ধ্যান-জ্ঞান। শুধু তাই নয়, করোনা স্বাভাবিক হওয়ার পর চাকরিতে ফিরলেও তার মন পড়ে থাকতো প্রিয় কবুতর খামারে । তাই সময় পেলেই চলে যেতেন গ্রামের বাড়িতে। গিয়েই লেগে যেতেন কবুতরের পরিচর্যায়।
তিনি জানান তার পরিশ্রম সার্থক হয়েছে। কারণ শখের বশে করলেও বর্তমানে এটি তার অন্যতম আয়ের উৎস। কারণ ৫ জোড়া কবুতর থেকে এখন তা শত জোড়ায় পরিণত হয়েছে। বাসার ছাদে করা খামারে বর্তমানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর। এর মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাক লাহুরী, ব্ল্যাক কিং, সাদা কিং, কালাদম, ব্ল্যাক ইন্ডিয়ান, রেড ইন্ডিয়ান ও শিবাজি। এছাড়াও রয়েছে গিরিবাজ, বাজিঘর ও ঘুঘুসহ নানা প্রজাতির পাখি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আবদুল কাদেরর ব্যক্তিগত খামারটি এখন পোষা কবুতর ও পাখির কলকাকলিতে মুখর। শখ থেকে এটি এখন তাকে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। তার কাছ থেকে কবুতর ও পাখি কিনতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে শৌখিন মানুষজন আসছেন। সুলভ মূল্যে পেয়ে ক্রেতারাও খুশি। অবশ্য অনেকে লালন-পালনের পদ্ধতিও দেখতে আসছেন। তিনি বলেন, পরিমিত খাবার ও পানি খাওয়ানোর পাশাপাশি কবুতর ও পাখির বাসস্থান তিনি নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখেন। পাখিদের অন্যতম খাবার হচ্ছে ধান, গম, ভুট্টা ও রেজা।
তাছাড়াও অসুস্থ হলে মাঝে মধ্যে বিভিন্ন টিকা দিয়ে থাকেন। তিনি বলেন, আন্তরিকতা দিয়ে লালন পালন করতে পারলে কবুতর পালনে লোকসান নেই। শখ থেকেই আস্তে আস্তে তার খামারের নাম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। যে কেউ চাইলেই তার কাছ থেকে কবুতর ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি সংগ্রহ করতে পারেন।
উল্লেখ্য তার খামারটি চান্দিনা উপজেলার দোল্লাই নবাবপুর বাজার থেকে ফতেপুরের বাগানবাড়িতে। যে কেউ যেকোনো সময়ে খামারটি পরিদর্শনে যেতে পারবেন বলে তিনি জানান।