প্রতিনিধি।।
সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের শ্বশুর বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনায় হামলা-ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। লুটপাটের পর তাদের বাড়ি ঘেরাও করে মঙ্গলবার অবরুদ্ধ রাখে হামলাকারীরা। ভুক্তভোগীরা পুলিশের জরুরি নম্বর ৯৯৯ ফোন করার পর যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৪জন আটক করা হয়।
উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের মীরাখোলা মুন্সি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এসময় সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হকের স্ত্রী হনুফা আক্তারের বড় ভাই আলাউদ্দিন মুন্সি ও নাছির উদ্দিন মুন্সির ঘরে ঢুকে ভাংচুর ও লুটপাট করে হামলাকারীরা। ওইসব ঘটনা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি’র কর্মী সমর্থকরা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
আটককৃতরা হলো- চান্দিনা উপজেলার মীরাখোলা গ্রামের আব্দুল রহিমপর ছেলে মো. রনি (১৮), মোখলেছুর রহমানের ছেলে মো. রহিম (৪০), মৃত মনহর উদ্দিনের ছেলে মোখলেছুর রহমান (৬৫) ও ফজলুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (৪০)।
ভুক্তভোগী আলাউদ্দিন মুন্সি জানান- আমার মুরগির ফার্মে একই গ্রামের কামাল নামে এক শ্রমিক কাজ করতো। প্রায় এক বছর পূর্বে সে সকল হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে আমাদের ফার্ম থেকে অব্যাহতি নেয়। সোমবার (৫ মে) বিকেলে আমাদের কাছে ৫ লাখ টাকা পাবে বলে লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে। এ ঘটনায় আমরা উপস্থিত লোকজনকে সব কিছু বুঝিয়ে বললে তারা নানা উস্কানিমূলক কথা বলে চলে যায়। রাত ১২টার পর আমরা যখন সকলে ঘুমিয়ে পড়ি তখন ৭০-৮০জন লোক এসে আমাদের বাড়িতে অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে ভাংচুর শুরু করে। আমি ও আমার ভাই কোন রকমে পালিয়ে আত্মরক্ষা করি। পুলিশের জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করার পর যৌথ বাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ঘটনার সাথে জড়িত ৪জনকে আটক করে। রাত আড়াইটার দিকে যৌথ বাহিনী চলে যাওয়ার পর মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত আমাদের বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। দুপুরে চান্দিনা থানা পুলিশ আমাদের বাড়িতে আসলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
আলাউদ্দিনের স্ত্রী পারভীন বেগম জানান, আমাদের ঘরের চারটি আলমারি ভেঙ্গে ৩৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার, ৪টি টিভি, ২টি এসি, ৩টি ফ্রিজ, সিসি ক্যামেরাসহ আসবাবপত্র ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়। হামলায় আমাদের শিশু সন্তানরা ভয়ে খাটের নিচে লুকায়। আতংকিত হয়ে দুই শিশু অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত কামালের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- আওয়ামী লীগ সরকার আমলে সাবেক রেলমন্ত্রীর ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে আলাউদ্দিন ও নাছির উদ্দিন মানুষের উপর অন্যায় অত্যাচার করতো। কেউ তাদের কথার অবাধ্য হলে তাদেরকে বাড়িতে ধরে নিয়ে মারধর করতো। কয়েকদিন আগেও তারা সরকারি টাকায় নির্মিত পাকা রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এলাকাবাসী ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
চান্দিনা উপজেলা এলডিপি সভাপতি একেএম সামছুল হক মাস্টার জানান- হামলার ঘটনায় এলডিপি’র কোন নেতা-কর্মী জড়িত নেই। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ মিথ্যা। তারপরও যদি কেউ আমাদের দলের হয়ে থাকে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) জাবেদ উল ইসলাম জানান- তাৎক্ষনিক ভাবে অভিযান চালিয়ে চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com