আবদুল্লাহ আল মারুফ।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে উপজেলা যুবলীগ নেতা ও উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদারের ওপর হামলার সময় একটি বিদেশি রাইফেল প্রদর্শন করেন হামলাকারী মনিরুজ্জামান জুয়েল। সেই জুয়েলের আছে একাধিক অস্ত্র বলে দাবি শাহজালাল মজুমদারের। জুয়েল গ্রামের দোকানে চা খেতে বসলেও সেটি প্রদর্শন করেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনিরুজ্জামান জুয়েল শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর গ্রামের হাজী আলী আকবরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে একটি চেক ডিজঅনার মামলায় আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শুক্রবার সন্ধ্যায় হামলার শিকার শাহজালাল মজুমদার বলেন, জুয়েল একজন সন্ত্রাসী। এই ছবিতো মাত্র ভাইরাল হলো। সে সব সময় এলাকায় এই ছাড়াও অনেক অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। গ্রামের দোকানে চা খেতে বসলেও সে অস্ত্র প্রদর্শন করে। তার বিরুদ্ধে আদালতের একাধিক গ্রেফতারী পরোয়ানা আছে। তারপরও রহস্যজনক কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে না। এরকম একাধিক কারণে পুলিশের ওপর নির্ভর করতে পারছিনা। তাই আমি রবিবার আদালতে মামলা করবো। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ-যুবলীগের কোনো কমিটিতে জুয়েলের কোনো কোনো পদ-পদবী নাই। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় গ্রেফতার থেকে বাঁচতে সে যুবলীগের পরিচয় বহন করছে।
এদিকে হামলার পর মেশিনগান হাতে জুয়েলের ভাইরাল হওয়া ছবি দুটিতে দেখা যায়, মনিরুজ্জামান জুয়েল একই উপজেলার মিয়াবাজারস্থ গ্রীণ ভিউ রেস্টুরেন্টের সামনে মেশিনগানটি একহাতে নিয়ে হাসি মুখে দাঁড়িয়ে আছেন। তার আরেক আরেক হাতে সিগারেট। অপর একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, আগ্নেয়াস্ত্র হাতে হামলার দিন বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল থেকে চলে যাচ্ছেন তিনি।
নাম পরিচয় গোপন রেখে কুমিল্লা জেলা পুলিশের কয়েকজন কর্মকর্তা রাইফেলটির মডেল সঠিকভাবে বলতে পারেননি। তবে তারা বলেছেন, জুয়েলের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি পয়েন্ট ২২ (.২২) সোল রাইফেল নয়। কারণ জুয়েল পয়েন্ট ২২ (.২২) সোল রাইফেলের লাইসেন্স নিয়েছিল।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে নিজ গ্রাম মান্দারিয়ায় ফিরছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার। বিকাল ৩টার দিকে নালঘর পশ্চিম বাজার সামাদ মেম্বারের বাড়ির কাছে তাঁর গাড়ির গতিরোধ করে হামলা চালান ‘যুবলীগ নেতা’ হিসেবে পরিচিত মনিরুজ্জামান জুয়েলসহ ৭/৮ জন। এ সময় শাহজালাল মজুমদার গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে একটি বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তার গাড়ি হকিস্টিক দিয়ে ভাংচুর করেন। শাহজালাল মজুমদারের সমর্থকেরা এগিয়ে এলে জুয়েল ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বলেও জানা যায়।
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ভাইরাল হওয়া ছবিটি বৃহস্পতিবারের নয়। এটি অনেক আগের ছবি। যখন জালাল মজুমদারের সাথে মনিরুজ্জামানের ভালো সম্পর্ক ছিল। পরে বৃহস্পতিবার তিনি ছবিটি আপলোড করেন।
জুয়েলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোনা থাকলেও কেন তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না এমন প্রশ্নে ওসি বলেন, তার বিরুদ্ধে একটি চেক ডিজঅনার মামলা রয়েছে। সেই মামলাতে তার গ্রেফতারের পরওয়ানা এসেছে। আমরা তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com