আমোদ প্রতিনিধি।
কুমিল্লার বুড়িচংয়ে স্বামীকে কিডনি না দেয়ার নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন রিপা আক্তার নামে এক গৃহবধু। নির্যাতন করেও ক্ষান্ত হয়নি শ^শুর বাড়ীর লোকজন, তার বিরুদ্ধে চালাচ্ছেন বিভিন্ন অপপ্রচার। বর্তমানে দুটি কন্যা শিশুকে নিয়ে বাবার বাড়ীতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন গৃহবধু রিপা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামী রবিউল বলেন, আমার সংকাটাপন্ন অবস্থা দেখে স্ত্রী আমার সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়।
গৃহবধু রিপা জানান, তার বড় সন্তানের বয়স ৪ বছর, ছোট সন্তানটি বয়স ৬ মাস, বুকের দুধ ছাড়া কিছুই খেতে পারেন না ছোট শিশুটি। দুটি সন্তানই অপারেশন (সিজার) এর মাধ্যমে জন্ম হয়েছে। এমতবস্থায় স্বামীর দুই কিডনি বিকল, স্বামীকে একটি কিডনি দেয়ার জন্য বলেন শ^শুড়বাড়ীর লোকজন।
কথামতো ডাক্তারের কাছেও যায় স্ত্রী রিপা আক্তার। কিন্তু দুটি সিজার ও ছোট শিশুটি বুকের দুধ খাওয়ায় আপাতত রিপা থেকে কিডনি নেয়া সম্ভব নয় বলে জানান ডাক্তার। কিন্তু কিছুতেই মানতে নারাজ শ^শুর বাড়ীর লোকজন, কিডনি দেয়ার জন্য রিপা আক্তারের উপর চালায় অমানুষিক নির্যাতন। কিডনি না দিতে পারলে চিকিৎসার জন্য বাবার বাড়ী থেকে ১০ লাখ টাকা আনতে বলে স্বামী ও শ^শুর। বাধ্য হয়ে বাবার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দেয় রিপা। এই টাকা দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ হয় স্বামী রবিউল ইসলাম।
সুস্থ্য হয়ে স্ত্রীর উপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় রবিউল। এখন ব্যবসা করার জন্য আরো ৫ লাখ টাকা দাবী করেন। না দিতে পারায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে স্বামী। টাকা না আনতে পারলে বাবার বাড়ীতে চলে যেতে বলে। এক কাপড়ে বাড়ী থেকে বের করে দিয়ে শ^শুড় নিজে এসে বাবার বাড়ীতে দিয়ে যায় রিপাকে।
এদিকে শিশু দুটির ভরন পোষন না দিয়ে রিপা আক্তারের রিরুদ্ধে বিভিন্ন সামাজিক ও গনমাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন শ^শুর বাড়ীর লোকজন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রিপা আক্তারের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার মেয়ের বিয়ের সময় ২ লাখ টাকার আসবাবপত্র, সাড়ে ৪ ভরি স্বর্ণ ও বিভিন্ন উপহার দিয়ে দেই। এছড়া মেয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্বামীর চিকিৎসার জন্য ৫ লাখ টাকা দেই। এরপরও তারা আমার মেয়েকে এক কাপড়ে আমার বাড়ীতে এনে দিয়ে যায়। আরো টাকার দাবীতে আমার বাড়ীতে এসে হামলা চালায়, আমার মেয়েকে মারধর করে। এ বিষয়ে আমার মেয়ে কুমিল্লা আদালতে একটি অভিযোগ দিলে তারা আমার মেয়ের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত স্বামী রবিউল ইসলাম বলেন, আমার স্ত্রী পরকিয়া করে। টিকটক করে। যখন আমার স্ত্রী শুনলো আমার কিডনি বিকল এবং আমি বাঁচবো তখনই সে আমার পনের লক্ষাধিক টাকার বেশী টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যায়। আমি আমার সন্তানদের থেকে দূরে আছি। আমি কষ্টে আছি। চাইলে আমি সব ডকুমেন্টস দেখাতে পারবো। আমার স্ত্রীর এসব অভিযোগ সত্য নয়।
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com