মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা নগরীতে ১১২বছরের পালং খাট সংরক্ষণ করছেন ছাতিপট্টি এলাকার ব্যবসায়ী শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান। তিনি তার মা- বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে এটি করছেন বলে জানান। এছাড়া এবাড়িতে ২৫০বছরের রুপার টাকা রাখার বক্স, রুপার পানদানি, গহনার বক্স, ২০০বছরের ৩০প্রকারের ২শতাধিক মুদ্রা রয়েছে। রয়েছে রুপার নৌকা,চেয়ার, সেতার,পায়ের মল, গলার হার, হুক্কা,কাটা চামচ,চামচ, গ্লাস, সুরমাদানি, আতরদানি ও কুপি।
৬৬ বছর বয়সের শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান জানান, ছোট বেলায় বোন রোকেয়া বেগম কাজলসহ মা- বাবার সাথে ঘুমিয়েছি এই খাটে। পিতা আজম খান অলংকারের ব্যবসা করতেন। কুমিল্লার কোন এক জমিদার ভারত চলে যাওয়ার সময় পালংখাটটি তার নিকট বিক্রি করেন। তার জন্মের আগে এটি সংগ্রহ করা হয়। খাটের গায়ে খোদাই করে লেখা আছে ৮ কার্তিক ১৩১৭ বাংলা। এর কারিগর কৈলাস চন্দ্র সূত্রধর। তাদের বাড়িতে এটি আছে ৭৫ বছর ধরে। এটি লম্বা ৮ফুট। পাশে ৬ ফুট। খাটের স্ট্যান্ডসহ উচ্চতা সাড়ে ৭ফুট। খাট ফ্লোর থেকে ২ফুট উঁচুতে।
তিনি বলেন, ৬৭সালে বাবা আজম খান ও ৮৮সালে মা তাহেরা বেগম মারা যান। মায়ের মৃত্যুর পার এটি আর তেমন ব্যবহার হয় না। অনেকে এসেছেন এটি নিয়ে যেতে। আবেগতাড়িত হয়ে তিনি বলেন,এই খাটের কাছে আসলে মা- বাবার কথা মনে হয়। তাদের স্মৃতি ধরে রাখতে এটি যুগের পর যুগ সংরক্ষণ করছেন। তার সন্তানদেরও অনুরোধ করেছেন এটি সংরক্ষণ করতে।
বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়,খাট ও প্রাচীন জিনিসপত্র দেখতে প্রায় বাড়িতে মানুষ আসে। কফি কালারের লোহা কাঠের নকশা করা খাটটি এখনও মজবুত। গত ৫০ বছরে একবার বার্নিশ করা হয়েছিলো। এখনও এটি নতুনের মতো।
ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবির বলেন, কুমিল্লা ও তার আশপাশের এলাকা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ। এক সময় ছিলো বড় গাছের সমারোহ। বিত্তবান লোকজন সৌখিন ছিলেন। নান্দনিক আসবাবপত্র তৈরি ও ব্যবহার তাদের আভিজাত্যের অংশ ছিলো। তার অংশ হিসেবে শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খানের পিতা এটি সংগ্রহ করেন।
ঢাকা সামাজিক বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম বলেন, লোহা কাঠ ধীরে বড় হয়। খুব বেশি মোটা হয় না। তবে এর কাঠ খুব মজবুত। বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে এটি দেখা যায়।
চট্টগ্রাম জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের উপ-পরিচালক ড. আতাউর রহমান বলেন, ব্যক্তি উদ্যোগে সংরক্ষণে থাকা নির্দশন গুলো দেশের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তারা চাইলে এগুলো জাদুঘরে সংরক্ষণ করতে পারেন।
https://youtu.be/qMbovc4h_OQ
মোবাইল: ০১৭১৭-৯১০৭৭৭
ইমেইল: newsamod@gmailcom
www.amodbd.com