হামলার প্রতিবাদ ও অস্ত্র উদ্ধারের দাবি স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানের
প্রতিনিধি।।
প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনী প্রচারণার কার্যক্রমে একাধিক হামলা, পোস্টার ব্যানার ছিঁড়ে ও পুড়ে ফেলা, প্রচার কার্যক্রমে বাধা, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কুমিল্লা-১১ চৌদ্দগ্রাম আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী, আ’লীগ নেতা সাবেক পৌর মেয়র মিজানুর রহমান। সোমবার বিকেলে একটি মিলনায়তনে তিনি লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে আমি নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রম উপজেলার কাশিনগর থেকে শুরু করলে প্রথম দিনই আ’লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের নির্দেশে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার প্রচার কার্যক্রমে হামলা করে। খবর পেয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা তাদের উপস্থিতিতেও সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। ১৯ ডিসেম্বর আমি নির্বাচনী আচরণ বিধি মেনে পূর্ব নির্ধারিত পথসভা ও গণমিছিল শেষ হওয়ার আগেই নৌকার প্রতীকের সমর্থকরা মহাসড়কে আরেকটি মিছিল শুরু করে। যা নির্বাচনী আচরণ পরিপন্থি।
লিখিত বক্তব্যে মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলার ৪নং শ্রীপুর ইউনিয়নটি সংসদ সদস্যের নিজের ইউনিয়ন। প্রচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকেই সন্ত্রাসী মনিরুজ্জামান জুয়েল ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন রুবেলের নেতৃত্বে একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী বাহিনী আমার পোস্টার ব্যানার ছিড়ে ফেলে। ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক শাহজালাল মজুমদারকে সন্ত্রাসী বাহিনী ওই এলাকায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না এবং আমার প্রচারণ কার্যক্রমে বাধা প্রদান করছে। একই সময় তারা আমার বেশ কয়েকজন কর্মীকে মারধর ও তাদের ব্যবহার মোটর সাইকেল ভাংচুর করে সাধারণ মানুষ ভয়ভীতি প্রদর্শন করে জিম্মী করেছে। এছাড়া শুভপুর, চিওড়া, গুণবতী, বাতিসা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা আমার পোস্টার ব্যানার ছিড়ে ফেলে প্রচার কার্যক্রমে বাধা প্রদান করছে। নেতাকর্মীদেরকে মারধর করে হুমকি-ধমকি প্রদর্শন করছে।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা সমগ্র উপজেলায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মাধ্যমে একটি অস্বস্তিকর ও ভীতিকর পরিবেশ তৈরী করে রেখেছে। যা একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রধান অন্তরায়। এ সকল বিষয়ে ইতোপূর্বে বার বার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক এবং রিটার্নিং অফিসার, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং সহকারী রিটার্নিং অফিসারকে লিখিত ও মৌখিকভাবে একাধিকবার অবগত করলেও স্থায়ী কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। একই রকম ঘটনার বার বার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এভাবে প্রতিনিয়ত চলতে থাকলে যেকোন সময়ে উভয়পক্ষের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বড় ধরণের সংঘর্ষ দেখা দিতে পারে, যাহা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধাগ্রস্থ হবে।
আমি চৌদ্দগ্রাম উপেজলা প্রশাসন ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রার্থীরা যাতে নির্বাচনী সকল প্রকার সভা, গণসংযোগ ও প্রচার- প্রচারণায় সমঅধিকার পায় এবং ভোটারগণ যাতে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করছি।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুস সোবহান ভুঁইয়া হাসান, আ’লীগের সাবেক উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক হেলাল চেয়ারম্যান, উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও শ্রীপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদারসহ আরও অনেকে।
নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমানের অভিযোগের প্রত্যেকটি বিষয় আমরা আমলে নিয়েছি। এরমধ্যে কয়েকটি অভিযোগের বিষয়ে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। অন্যান্য অভিযোগগুলো নির্বাচন পরিচালনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। এ সকল বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।