গুলিবিদ্ধ সাব্বিরের ৪০দিন পর মৃত্যু

 

 প্রতিনিধি ।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে গুলিবিদ্ধ হয় সাব্বির হোসেন(১৯)। গুলিবিদ্ধ হওয়ার ৪০দিন পর শনিবার নানার বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। সাব্বিরের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত আলমগীর হোসেনের ছেলে। বাবার মৃত্যুর পর মায়ের সাথে ছোট্ট দুই ভাই-বোন নিয়ে থাকতেন দেবিদ্বার পৌর দক্ষিণ ভিংলাবাড়ি এলাকায় নানার বাড়িতে। পাশের মরিচাকান্দা জিয়া স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন সাব্বির। পাশাপাশি সংসারের খরচ জোগাতে চালাতেন সিএনজি অটোরিকশা।
স্বজনরা জানান, গত ৫ আগস্ট সকাল ১০টার দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবিতে দেবিদ্বার উপজেলা সদরের নিউ মার্কেট এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। এতে সাব্বিরও যোগ দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে সাব্বিরের মাথায় দুটি গুলিবিদ্ধ হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার একটি প্রাইভেট হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখান দীর্ঘ ৩৫ দিন চিকিৎসার পর হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হলে তাকে কুমিল্লার দেবিদ্বারে নানা বাড়িতে আনা হয়। শনিবার সকালে শরীর ব্যাথার কথা বলেন সাব্বির। হাসপাতালে নেয়ার আগেই সাব্বির মারা যান।
সাব্বিরের মা রিনা আক্তার বলেন, দুই বছর আগে সাব্বিরের বাবার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে সাব্বির পড়ালেখার পাশাপাশি সিএনজি অটো রিকশা চালিয়ে তাদের সংসার চালাতেন। সরকার পতনের দাবিতে প্রতিদিনই সে আন্দোলনে যেত। কোনোভাবেই তাকে ঘরে আটকে রাখতে পারিনি। আমি ছেলে হত্যার বিচার চাই।
দেবিদ্বার থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, সাব্বিরকে হত্যাচেষ্টায় ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করে ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলা করেন তার মামা নাজমুল হক। ওই মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে।
দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, সাব্বিরের পরিবারের সাথে কথা বলে লাশ দাফন করার ব্যবস্থা করা হবে। প্রশাসন সাব্বিরের পরিবারের পাশে আছেন।