বিপুলাসারে দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে আতঙ্ক

স্টাফ রিপোর্টার।।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার বিপুলাসার ইউনিয়নে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। সম্প্রতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম হিরণ ও যুবলীগ নেতা মাহফুজ আলম মাহবুবের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত কয়েক বছর ধরে বিপুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম হিরণ ও যুবলীগ নেতা মাহফুজ আলম মাহবুব যৌথ ভাবে কাজ করে আসছে। সম্প্রতি তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এর জের ধরে উভয়ের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ গত ১৩ অক্টোবরের সংঘর্ষে হিরণ গ্রুপের রুবেল ও সুমন নামের দুজন আহত হয়। এ ঘটনায় মাহবুব গ্রুপের চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত কয়েকজনকে বিবাদী করে মনোহরগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করে হিরণ গ্রুপের আহত রুবেল।
মামলার এজাহারে বাদী রুবেলের বর্ণনা মোতাবেক সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় গত ১২ অক্টোবর। তিনি বর্ণনা করেন, ‘১২ অক্টোবর বিপুলাসার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত নেতৃবৃন্দকে যুবলীগ নেতা মাহফুজ আলম মাহবুব গালমন্দ করেন। প্রতিবাদ করায় আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম হিরণ ও তার সমর্থকদের প্রতি ক্ষিপ্ত হন যুবলীগ নেতা মাহবুব। এর সূত্র ধরে পরদিন ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিপুলাসার বাজারে যাওয়ার পথে জাওড়া পূর্বপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হিরণের সমর্থকদের উপর হামলা করেন মাহবুব ও তার সমর্থকরা। এতে হিরুণ গ্রুপের রুবেল ও সুমন আহত হয়। উভয়কে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে রুবেলের শারিরীক অবস্থা কিছুটা স্বাভাবিক হলেও সুমন ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
এ বিষয়ে আহত সুমন বলেন, ‘আমি হিরণের বন্ধু। তবে আমি রাজনীতিতে অতটা জড়িত না। ওইদিন সন্ধ্যায় আমরা বাজারে যাওয়ার পথে মাহবুব এবং তার লোকেরা আমাদের হামলা করেছে, কি কারণে হামলা করেছে আমি এর কিছুই জানিনা।’
স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগের দ্বন্দ্বের বিষয়ে জানতে চাইলে বিপুলাসার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহফুজুল হক মজুমদার বলেন, ‘গত কয়েক বছর যাবত দেখে আসছি হিরণ এবং মাহবুবের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিলো। ইতোমধ্যে কি কারণে তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে, তা আমার জানা নেই। তবে ১৩ অক্টোবরের ঘটনায় আমি যতটুকু জানি, সুমন-রুবেল (হিরণ গ্রুপ) বাজারে যাওয়ার পথে দলবল নিয়ে মাহবুব তাদের উপর হামলা করে। আমি মনে করি নিজেদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে আমাদের দলীয় ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে আমি উপজেলা নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল আলম হিরণ বলেন, ‘মাহবুব ও তার লোকজন খুবই খারাপ। তাদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, জমিদখল, ইয়াবা বিক্রিসহ এমন খারাপ কাজ নেই যা তারা করে না। আমার দাবি পুলিশ তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসুক।’
এদিকে যুবলীগ নেতা মাহফুজ আলম মাহবুবের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করে ও মেসেজ পাঠিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেয়া যায়নি।
উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক দেওয়ান জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সংগঠনের নীতিমালা বিরোধী কার্যকলাপের দায়ে বিপুলাসার ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সম্পাদক মাহবুব ও যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ুনকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। মনোহরগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ কোনো প্রকার উচ্ছৃঙ্খলতাকে সমর্থন করে না।’