সম্ভাবনার প্রত্ন স্থাপনা লালমাই পাহাড়চূড়ার হাতিগাড়া মুড়া

 

inside post

অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের চূড়ায় হাতিগাড়া মুড়া। কোটবাড়ী-কালিরবাজার সড়কের পাশে এই প্রত্ন স্থাপনার অবস্থান। এ মুড়ার উচ্চতা প্রায় ১৫০ ফুট। ২০১৬ সালের প্রথম দিকে কিছু অংশ খননের পর কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। এতে সেই সাইটটি লতাপাতায় ঢেকে যায়। এটি খনন শেষে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলে সেটি প্রত্ন পর্যটনে সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হবে।

সূত্র জানায়, লালমাই-ময়নামতি পাহাড় এলাকার ১১ কিলোমিটারের মধ্যে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর প্রাচীনকালের প্রত্নবস্তু-নিদর্শন উন্মোচনের জন্য ৫৪টি সাইট বাছাই করে। এর মধ্যে ২৩টি সাইট খননযোগ্য অবস্থায় রয়েছে। এ ২৩টি পুরাকীর্তির মধ্যে বিভিন্ন সময়ে শালবন বিহার, রূপবান মুড়া, কুটিলা মুড়া, ইটাখোলা মুড়া, লতিকোট মুড়া, ময়নামতির রানীর বাংলো, ময়নামতি মাউন্ট-১ এর বি, ময়নামতি মাউন্ট-২, আনন্দ বিহার, ভোজ বিহার, চারপত্র মুড়াসহ ১১টি মুড়া খনন করা হয়েছে। এসব খননের মাধ্যমে মূল্যবান প্রত্নবস্তু পাওয়া গেছে। অপর ১২টি সাইটের মধ্যে ২০১৬সালের ২৮ জানুয়ারি হাতিগাড়া এলাকায় ‘হাতিগাড়া মুড়া’ খননের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

ঐতিহ্য কুমিল্লার পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম ইমরুল বলেন, খননের মাধ্যমে প্রাচীনকালের শিলালিপি, মুদ্রা, ভাস্কর্য, টেরাকোটা, মৃৎপাত্রসহ অন্যান্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র আবিষ্কৃত হয়। এতে আমরা প্রাচীন মানুষের জীবন ব্যবস্থা, ধর্ম-সমাজ-সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারি। এ প্রক্রিয়া কুমিল্লার সংস্কৃতির সঙ্গে দেশের সংস্কৃতিকেও সমুন্নত করবে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুর্শেদ রায়হান বলেন,পদ্ধতিগত খনন না হলে সাইট ক্ষতিগ্রস্থের আশংকা থাকে। যেমন হাতিগাড়া মুড়া। এটি খনন শুরু হলেও তা শেষ হয়নি। এছাড়া সুরক্ষার উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এদিকে খননে পর্যাপ্ত বাজেট প্রয়োজন। এখন হয়তো খননে আমাদের প্রয়োজনীয় বাজেট নেই। কয়েক বছর পরে আমাদের সক্ষমতা বাড়তে পারে। তাই সাইট গুলো শনাক্তের পরে সংরক্ষণ করতে হবে। যাতে কেউ কেটে নষ্ট করতে না পারে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, প্রত্ন পর্যটনে কুমিল্লার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে নিকটবর্তী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান গুলোতে যোগাযোগের ভালো সুবিধা রয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর আন্তরিক হলে এখানে দর্শনার্থীর ঢল নামবে।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. আতাউর রহমান জানান, এটি ৭ম শতকের পুরাকীর্তি বলে ধারণা করা হচ্ছে। হাতিগাড়া প্রত্নস্থলের পাহাড়ের সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানার। এখানে প্রায় ২০ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে হবে। সেজন্য ২০১৮ সালে জেলা প্রশাসন ২৭কোটি টাকা চেয়েছিলো। সব মিলিয়ে আমরা আমাদের অধিদপ্তরে ৩০ কোটি টাকা চেয়েছি। কাজটি সম্পন্ন হলে এটি প্রত্ন পর্যটনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

আরো পড়ুন