করোনায় আক্রান্ত হয়েও রোগী দেখছেন চিকিৎসক!

inside post
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথকে তাঁর কর্তৃপক্ষ আইসোলেশনে থাকার জন্য ছুটি দিয়েছেন।অথচ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তিনি রোগী দেখছেন! রোববার (২৭ জুন) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত অনেক রোগী দেখেছেন। প্রথমে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনরা বিষয়টি না জানলেও পরে করোনা আক্রান্ত হয়ে রোগী দেখার বিষয়টি জানাজানি হলে সকলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোপেডিক) শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ নিয়মিত রোগী দেখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কুমারশীল মোড়ের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে। শারীরিক ভাবে অসুস্থ হওয়ায় গত ১৪ জুন চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথের স্ত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষা করতে নমুনা প্রদান করেন। করোনার এন্টিজেন পরীক্ষায় তার স্ত্রীর পজিটিভ আসে। এরপর চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ করোনার এন্টিজেন পরীক্ষা করলে তার নেগেটিভ আগে। কিন্তু ঢাকায় পাঠানো নমুনার পিসিআর ল্যাব রিপোর্টে চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ পজিটিভ হন। এর কিছুদিন পর তিনি আবার এন্টিজেন টেস্ট করালে তার নেগেটিভ আগে। একই নমুনা ঢাকায় পাঠালে গত শনিবার আসা রিপোর্টে চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথের করোনা ভাইরাস পজিটিভ আসে। রোববার বিকেলে তার ব্যক্তিগত চেম্বারে গিয়ে দেখা যায় লোকজনের প্রচণ্ড জটলা। সিরিয়াল অনুযায়ী প্রথমে তার ভিজিটের টাকা পরিশোধ করে রোগীকে রুমের ভিতরে প্রবেশ করানো হচ্ছে। একে একে কয়েক ঘন্টার মধ্যে ৩০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন করোনাক্রান্ত চিকিৎসক শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ। ফলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েছেন তাঁর কাছে সেবা নিতে আসা রোগীরা।
ডা. শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ রোববার সন্ধ্যায় বলেন, ‘আমি কিছুক্ষণ আগে আবার পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি জেনেছি। আমি তো রোগীদের আগেই সময় দিয়ে রেখেছিলাম। আরও কিছু রোগী আছে। তাদেরকে দেখে আমি চেম্বার বন্ধ করে দিব। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত নই। তবে করোনা পজিটিভ নিয়ে একজন চিকিৎসকের চেম্বার করা ঠিক হয়নি।’
হবিগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘ডাক্তার শ্যামল রঞ্জন দেবনাথ করোনা আক্রান্ত থাকায় তাকে আইসোলেশনে থাকতে ছুটি দেওয়া হয়েছে। তিনি ছুটিতে গিয়ে যদি আইসোলেশনে না থেকে বেসরকারি চেম্বারে রোগী দেখে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আরো পড়ুন