কুমিল্লায় জলজটে জনদুর্ভোগ, মাছ ধরার উৎসব নগীরর সড়কে সড়কে
আমোদ প্রতিনিধি।।
২৯জুন পর্যন্ত যেখানে বৃষ্টিপাতের মোট পরিমাণ ছিল ২৬০মিমি, সেখানে ৩০জুন একদিনেই কুমিল্লায় বৃষ্টিপাত হয় রেকর্ড ১৮৬ মিমি।
কুমিল্লা জেলার আবহাওয়া কর্মকর্তা ইসমাইল ভূঁইয়া জানান, জুন মাসে কুমিল্লায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩৫০মিমি। কিন্তু এ মাসে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৪৬মিমি। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে কুমিল্লায় ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে বুধবার রাতের টানা ছয় ঘণ্টা বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে কুমিল্লা নগরীর নিমাঞ্চল। বৃহস্পতিবার দুপুর একটা পর্যন্ত জলাবদ্ধতা ছিল নগরীর অশোকতলা, ঠাকুরপাড়া, জেনারেল হাসপাতাল এলাকা, কান্দিরপাড় ও টমছমব্রিজের একাংশ, দক্ষিণ ও উত্তর চর্থা, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকা, কুচাইতলি, হাউজিং এস্টেট, ধর্মপুরের একাংশ, বাগিচাগাঁও, স্টেডিয়াম সুপার মার্কেট ও শাকতলা এলাকায়। জলাবদ্ধতার কারণে বেশ কিছু এলাকায় লম্বা সময় ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। কোথাও কোথাও আট থেকে ১০ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। মাঝারি বাতাসের সাথে বৃষ্টির পানি জমাট বেঁধে গাছের গোড়া নরম হয়ে যাওয়ায় শহরের অনেক স্থানে গাছ উপড়ে পড়তে দেখা গেছে।
জলাবদ্ধতার কারণে বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। নগরীর ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা, যেখানে টিনশেড ঘর রয়েছে, ওইসব ঘরবাড়ি পুরোপুরি নিমজ্জিত হয়েছে। এছাড়া বাসাবাড়ির ভবনগুলোর নিচতলার অধিকাংশে পানি প্রবেশ করেছে। জলাবদ্ধতার কারণে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছে কুমিল্লা নগরীর অসংখ্য মানুষ। কুমিল্লার দুই গুরুত্বপূর্ণ সরকারি হাসপাতাল এলাকায় জলাবদ্ধতায় নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।
কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে রোগী দেখাতে এসেছেন এরশাদ মিয়া। এরশাদ মিয়া জানান, প্রায় হাঁটু সমান পানি ডিঙিয়ে ডাক্তারের কক্ষে গিয়েছি। পানি ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত।
এছাড়া পানি জমে নিমাঞ্চলের জমি ও শহরের পুকুর প্লাবিত হওয়ায় নগরীরর সড়কে মাছ প্রবেশ করেচে। সড়কে সড়কে ধরার উৎসবে মেতে উঠেছেন স্থানীয়রা। কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ড, ঠাকুরপাড়া, জেনারেল হাসপাতাল ও অশোকতলা ও ধর্মপুর খাদ্যগুদাম এলাকায় জাল মেরে ও ফাঁদ পেতে মাছ ধরতে দেখা গেছে তরুণ ও বয়স্ক মানুষদের। আকস্মিক অতিভারী বৃষ্টির কারণে সড়কে মাছও উঠে এসেছে প্রচুর।
কুমিল্লার ঠাকুরপাড়া বৌদ্ধমন্দিরের সামনে জাল মেরে মাছ ধরেন ভ্যানচালক ইমরান। ইমরান বলেন, গুঁড়া মাছের পাশাপাশি কই, তেলাপিয়া ও অনেক রুই মাছ পেয়েছেন তিনি।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী মীর শওকত জানান, অতিভারী বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকা তাৎক্ষণিক প্লাবিত হয়েছে। তবে এখন পানি কমে আসছে। আমরা ২০জন পরিচ্ছনতা কর্মী নিয়োগ দিয়েছি ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করার জন্য, যাতে দ্রুত পানি নেমে যেতে পারে।