উৎসবের রঙ নেই রাজগঞ্জের মাছের মেলায়
মো.ইলিয়াছ হোসাইন।।
নতুন বছরের প্রথম দিন আজ। প্রতি বছরের মত এবারো বড় বাহারী মাছে সয়লাব কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ বাজার। ট্রাফিক মোড় থেকে মোগলটুলি মোড় পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে বসেছে মাছের সারি সারি ডালা। তবে মাছের মেলায় উৎসবের রঙ নেই। নেই ক্রেতার ভিড়। বিক্রি কম হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা।
ক্রোতাদের সূত্র জানায়,যেখানে থাকার কথা ছিলো হাজারো ক্রেতার ভীড়। বাবা তার সন্তানকে সাথে নিয়ে মেলার সবচেয়ে বড় মাছটি কিনবে। স্বজনের বাড়িতে নতুন বছরের উপহার হিসেবে নিয়ে যাবে মেলার সবচেয়ে বড় মাছটি। এর মূল কারণ করোনা মহামারী এবং এর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের ঘোষিত ১৪ এপ্রিল থেকে ২১শে এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর লকডাউন কর্মসূচির প্রভাব।
তিতাস উপজেলা থেকে আসা লক্ষণ সেন নামের একজন মাছ বিক্রেতা জানান, তিনজন সহযোগী নিয়ে সকাল ৯টায় এসেছেন প্রায় ৮ কেজি পরিমাণ ওজনের অনেকগুলো কাতল মাছ নিয়ে। বসে আছেন ক্রেতার আশায়। কিন্তু ক্রেতার কোনো ভিড় নেই। ঋণ করে পুঁজি নিয়ে বড় মাছ নিয়ে এসেছি, কিন্তু মেলায় ক্রেতার সংখ্যা দেখে এখন মাথায় হাত! একটু সামনে হাঁটতেই আরেক বিক্রেতার মুখ থেকে জানা যায়, তিনি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র তিনটি মাছ বিক্রি করেছেন। যেখানে আগে বিশের উর্ধ্বে মাছ বিক্রি করতে পারতেন। তিনি আরো বলেন, আগেরবার মাছ বিক্রি করতাম সাতশ’ টাকা থেকে নয়শ’ টাকা কেজি দরে, কিন্তু এবার চারশ’ টাকা দরে কিনবার ক্রেতার সংখ্যাও নেই।’
একজন ক্রেতার সাথে কথা বলে জানা যায়,করোনার প্রভাবে নিজের চাকরির বেহাল অবস্থা, তিনি চাকরি করতেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। খুব ভালো অবস্থা। কিন্তু করোনার প্রথম ধাপে নিজের চাকরিটি হারিয়েছেন। এ বছর এসে আরেকটি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন,বেতন পান কোনো রকম চলার মতো,যা দিয়ে শহরে বাড়ি ভাড়াসহ পারিবারিক খরচা যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়। তারপরেও ছেলের বড় মাছ খাবার আবদার ফেলতে না পেরে এসেছেন রাজগঞ্জ বাজারে। সাধ্যের মধ্যে একটা ছোট মাছ কিনে নিয়েছেন।