পাথরের ওপরে রীমার বই টিফিন ক্যারিয়ার আর ছড়ানো-ছিটানো ভাত!
মহিউদ্দিন মোল্লা
বিজয়পুর রেলগেটের কাছাকাছি স্থান। পাথরের ওপর পড়ে ছিল রীমার বই, ভাঙা টিফিন ক্যারিয়ার, ছড়ানো-ছিটানো ভাত। এমন ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। কাউসার হামিদ নামে একজন ছবিটি শেয়ার করে ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পাথরের ওপর ছড়িয়ে আছে দুপুরের টিফিন আর বই। পাশে টুকরো হয়ে আছে শৈশবের লাশ!’
বুধবার রীমাদের বাড়িতে দেখা যায় স্বজনদের বুক ফাটা আহাজারি। বাবা রিপন মিয়া বাড়ির একপাশে কাঁদছেন। রীমার মরদেহকে ঘিরে বাড়িতে মানুষের জটলা। বাবা রিপন মিয়ার মাথা মুছে দিচ্ছেন প্রতিবেশীরা। বারবার মূর্ছা যেতে যেতে রিপন মিয়া বলছেন, ‘আমার মাইয়া, আমার কইলজাডা। প্রতিদিন আমার কাছে আবদার করে করতো, আব্বু, দশটা ট্যাকা দেও! আর এ কথা কইতো না আমার মাইয়াডা। স্কুলে যাওয়ার সময় ভাত নিয়া গেছে। আমার মাইয়া ভাত খাইতে পারলো না।’
বিজয়পুর বাজারে ছেলেকে নিয়ে কাঁচা তরকারির ব্যবসা করেন রিপন মিয়া। দুই মেয়ের মধ্যে এক মিয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। নিজের নামের প্রথম অক্ষর নিয়ে ছোট মেয়ের নাম দিয়েছেন রীমা। সেই আদরের রীমা বুধবার ট্রেনে কাটা পড়ে। সাথে কাটা পড়ে আরও দুই বান্ধবী তাসফিয়া ও মীম। তারা সবাই বিজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
উল্লেখ্য-বুধবার সাড়ে ১১টার সময় মহানগর প্রভাতী ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হয় কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। তারা সবাই দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা।