বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অবহেলিত দক্ষিণ
নগরীর উত্তরের ১৮৫টি ডাস্টবিনে প্রতিদিন পড়ছে পৌনে দুইশ’ টন আবর্জনা। দক্ষিণ অংশ নতুন ৯ওয়ার্ডে এখনও গড়ে উঠেনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আবর্জনা ফেলা হয় নগরী সংলগ্ন জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুর এলাকায়। জনবসতির পাশে আবর্জনা ফেলায় মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বলে স্থানীয়রা জানান। বর্জ্য ব্যবস্থাপনার রয়েছে জনবল সংকট। নেই জনবলের সুরক্ষা সামগ্রী। তবে সিটি করপোরেশন বলছে,এক দুই বছরের মধ্যে বর্জ্য থেকে বিদ্যুত উৎপাদন করা হবে। এছাড়া আবর্জনা ফেলার আরো দুইটি স্থান নির্ধারণ করা হতে পারে। এনিয়ে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংবাদে উল্লেখ করা, কুমিল্লা নগরী দক্ষিণের ৯টি ওয়ার্ডে ডাস্টবিন নেই বললেই চলে। যে যার মতো সড়কে,বাড়ির পাশের গর্তে আবর্জনা ফেলছেন। পুরাতন ১৮টি ওয়ার্ডের ময়লা আবর্জনা বিবিরবাজার স্থলবন্দর সড়কের পাশে জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দৌলতপুরে ফেলা হয়। দিন দিন আবর্জনা আকাশ ছুঁই ছুঁই করছে। একটি ক্রেন দিয়ে আবর্জনা সমান করে রাখছেন শ্রমিকরা। নীল আকাশের নিচে আবর্জনার সাদা স্তূপ। তবে তার পাশে আবর্জনার দুর্গন্ধ ও রোগ-ব্যাধিতে বিবর্ণ মানুষের জীবন।
দৌলতপুর গ্রামের আমিরুল ইসলাম জানান, ৩০ বছর ধরে এখানে ময়লা ফেলা হচ্ছে। ময়লার দুর্গন্ধে বসবাস করা দায়। দীর্ঘদিন ধরে শুনছি ময়লা পরিশোধন করা হবে। কিন্তু বাস্তবায়ন দেখছি না।
ব্যবসায়ী নেতা জহিরুল ইসলাম বলেন, দৌলতপুরের আবর্জনার কারণে মানুষের সঙ্গে এলাকার পশুপাখি, জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখানের আবর্জনাগুলো পরিশোধন করার দাবি দীর্ঘদিনের। সেটি করা হলে মানুষ উপকৃত হবে।
সিটির দক্ষিণ এলাকার বাসিন্দা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ন্যাশনাল ক্লাবের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন মজুমদার বলেন,দক্ষিণ অংশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বলতে কিছু নেই। যে যার মতো সড়কে,বাড়ির পাশের গর্তে আবর্জনা ফেলছেন।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নগরীতে আগে ছিলো ৫লাখ লোক ছিলো। এখন তা ১২লাখের বেশি। প্রতিদিন ২৭টি ট্রাক ১৬২টনের বেশি বর্জ্য সংগ্রহ করে। ফলের মৌসুমে তা ১৮০টন ছাড়িয়ে যায়। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের জনবল আছে ৪২৪জন। আরো দুইশ’ জনবল পেলে কাজের গতি বাড়বে। তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ অংশে এখনও তেমন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেনি। গোমতীর উত্তর পাড়ে ও সিটির দক্ষিণ এলাকায় আরো দুইটি স্থান অধিগ্রহণ করে আবর্জনা ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া মেডিকেলের আবর্জনা একটি সংস্থা পৃথক সংগ্রহ করে বলেও তিনি জানান।
এ বিষয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড.সফিকুল ইসলাম বলেন, দৌলতপুরে আমাদের অনেক জায়গা খালি রয়েছে। তবে সামনে ময়লা ফেলায় ভরাট দেখাচ্ছে। এদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের আবর্জনা পরিশোধনের জন্য একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। যা থেকে সার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হতে এক দ্ইু বছর সময় লাগবে। এতে অনেক সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
আমরা চাই, নগরীর দক্ষিণ অংশে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠুক। পরিচ্ছন্ন হোক পরিবেশ। এদিকে গোমতীর উত্তর পাড়ে ও সিটির দক্ষিণ এলাকায় আরো দুইটি স্থানে আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা করা হোক। এছাড়া আবর্জনা পরিশোধন করে সার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে পরিবেশ দূষণ কমবে।