বিশ্ববিদ্যালয় হোক প্রকৃতিবান্ধব –অধ্যাপক ডা: মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও ফ্যাকাল্টি, বিভাগ, ছাত্রছাত্রী বসবাসের জন্য আবাসিক হল, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা এবং হাইওয়ে থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াতের রাস্তা নির্মাণসহ সকল উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও ভূমি অধিগ্রহণের নিমিত্তে ১৬৫৫ কোটি টাকা সরকার বরাদ্দ দিয়েছেন। শুনা যাচ্ছে ১০০০ ছাত্র এবং ১০০০ ছাত্রীদের আবাসিক হল এবং শিক্ষক কর্মচারীদের জন্য ১০তলার ছয়টি ভবন এ বরাদ্দের অন্তর্ভূক্ত। এরই মধ্যে ২০১ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে যার ৪০% ভাগ পাহাড়ী অঞ্চল এবং ৬০% ভাগ সমতল ভূমি। সমতল ভূমি নিয়ে আমাদের কোন দুশ্চিন্তা নাই তবে পাহাড়ী অঞ্চল নিয়েই আমাদের সকল চিন্তা ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হয়েছে।
কেননা এ অঞ্চলের লালমাই অধ্যুষিত পাহাড়ী এলাকার কয়েকটি বিশাল অংশ ভূমিদস্যুদের অত্যাচারে নির্বিচারে মাটি কাটায় প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। পাহাড়ী এলাকাটি খুব বেশী উঁচু পর্বতশৃঙ্গ বা রকি মাউন্টেইন নয়। বিরাট ধংসযজ্ঞ করে পাহাড় কেটে বনাঞ্চল ধংস করে কোন নির্মাণ কাজই চালানোর প্রয়োজন হবে না। কেননা ষাটের দশকে একটি পাহাড়েরও সৌন্দর্য্য নষ্ট না করে মহান দার্শনিক আখতার হামিদ খান বিশালকায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডিমিটি নির্মাণ করে দিয়ে গিয়েছেন যা আজ জাতীয়-আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে একটি সুন্দর স্থাপনা হিসেবে খ্যাতি লাভ করেছে।
পাহাড়সমূহ রক্ষা করলে যে শুধু প্রকৃতি রক্ষা পাবে তা নয়, স্থাপনার উপরে দাড়িয়ে উপভোগ করতে পারবে আকাশে ভেসে বেড়ানো মেঘের ভেলা। চিম্বুক পাহাড়ের মত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থান না করলেও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা পাহাড় ও বিশ্ববিদ্যালয় মেশানো বিরল দৃশ্য অবলোকনে মাঝে মধ্যে প্রকৃতির সঙ্গে একাকার হওয়ার সুযোগ পাবে। পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় সচেষ্ট হলে ছাত্রছাত্রীরা পড়ালেখায়ও মনযোগী হবে বলে অভিজ্ঞ মহলের বিশ্বাস।