ভিক্টোরিয়া ক্যাম্পাসে নতুন দিনের হাতছানি

 

অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ। দক্ষিণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কলেজটির অবকাঠামোগত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ শুরু হয়েছে। ক্যাম্পাসে নতুন দিনের হাতছানি দেখা যাচ্ছে। কাজ সমাপ্ত হলে বদলে যাবে ক্যাম্পাসের চেহারা।

কলেজ সূত্র জানায়,সম্প্রতি এই কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন দেশের প্রখ্যাত গণিতবিদ প্রফেসর ড.আবু জাফর খান। এখানে শিক্ষা ব্যবস্থা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য নেয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। সম্প্রতি অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তির জন্য অনলাইনে ফরম পূরণ ও টাকা প্রেরণের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে ১৫ হাজার ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী উপকৃত হয়েছেন। তাদের মধ্যে উত্তীর্ণরা আবারও অনলাইনে টাকা জমা দিতে পারবেন। এতে করোনায় তার দূর থেকে পরিবহনে আসার ঝুঁকি ও খরচ বেঁচে গেছে। এদিকে কলেজের একাদশ শাখায় বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। যেটি এই এলাকার নান্দনিক কর্নার বলে শিক্ষার্থীদের অভিমত। নান্দনিক ডেকোরেশন এবং লাইটিংয়ে সেটি যে কারো দৃষ্টি কাড়বে। রয়েছে নান্দনিক টেরাকোটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি। এখানে আলোকচিত্র ও বর্ণনার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। রয়েছে প্রাচীন ও সমসাময়িক কয়েক সহস্রাধিক বই।

অপরদিকে কলেজের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সংস্কারের কাজ চলছে। এখানে সব মিলিয়ে স্থান পাবে লক্ষাধিক বই। তার মধ্যে কিছু দুষ্প্রাপ্য বইও রয়েছে। বইয়ের তালিকা কম্পিউটারে সংরক্ষণ করা হবে যাতে দ্রুত বই খুঁজে বের করা যায়। এটিতে এক সাথে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী বসে পড়তে পারবে। রয়েছে শিক্ষকদের পড়ার আলাদা কক্ষ। এছাড়া বাইরের গবেষকরাও এখানে কাজ করতে পারবেন।

সূত্র আরো জানায়,প্রায় ৪০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। সেটি পাশ হলে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন হবে। বিশেষ করে পাঁচটি একাডেমিক ভবন,১০০০আসনের অডিটোরিয়াম,১০০০সিটের করে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য দুইটি হোস্টেল নির্মাণ করা হবে।

শিক্ষার্থী আশিক ইরান বলেন,কলেজের বর্তমান প্রশাসন কলেজের সোনালী দিন গুলো ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন। বিশেষ করে নতুন লাইব্রেরি বাস্তবায়ন চলছে। এতে লক্ষাধিক বই থাকবে। যা শিক্ষার্থীদের জ্ঞান আহরণে নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে।

কলেজ শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন,নতুন অধ্যক্ষ মহোদয় দায়িত্ব নেয়ার পর কলেজের অবকাঠামোগত ও শিক্ষার মান উন্নয়নে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। করোনার পর কলেজ চালু হলে শিক্ষার্থীরা এর সুফল পাবেন।

 


কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.আবু জাফর খান বলেন, স্থানীয় এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার মহোদয়ের প্রচেষ্টায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। বড় প্রকল্পটি অনুমোদন পেলে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করা যাবে। এদিকে সিইডিপি প্রজেক্টের মাধ্যমে আমাদের কলেজের কিছু উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছিলো। এটির ধীরগতির কারণে উন্নয়ন কাজ আশানুরুপ হয়নি। এটির গতি বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন.একাদশ শাখার বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার নিয়ে আমাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে। কলেজ চালু হলে এখানে বাইরের শিক্ষার্থীদেরও প্রবেশের সুযোগ দেয়া হবে। এতে তারা বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জেনে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ গড়ার কাজে মনোনিবেশ করতে পারবে। এদিকে তিনি শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমাতে ডিগ্রি শাখায় একটি ব্যাংকের শাখা ও বহিরাগতদের উৎপাত ঠেকাতে পুলিশ ফাঁড়ির আবেদন জানান।

উল্লেখ্য, ১৮৯৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন জমিদার রায় বাহাদুর আনন্দ চন্দ্র রায় কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। কলেজটি উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠদানের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে। ১৯৬২ সালে এ কলেজ উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রি শাখায় বিভক্ত হয়। বর্তমানে এ কলেজ ২৭ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। উচ্চ মাধ্যমিক শাখাটি কুমিল্লা নগরীর রাণীর দিঘীর পশ্চিমপাড়ে ডিগ্রি শাখাটি নগরীর ধর্মপুরে অবস্থিত।