কুলের গ্রাম শিকারপুর
![](https://amodbd.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
অফিস রিপোর্টার।।
শিকারপুর। কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম। এই এলাকায় প্রচুর কচুর লতি চাষ হয়। গত দুই বছর ধরে সেই গ্রামে আধিপত্য দেখাচ্ছে তিন সুন্দরী। সেগুলো হচ্ছে,বল সুন্দরী,বারি সুন্দরী ও কাশ্মিরী কুল। স্থানীয় ভাষায় কুলকে বলে বরই। শিকারপুরের উদ্যোক্তাদের সফলতা দেখে পাশের গ্রামেও তা ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাতাইছড়ি-বরুড়া সড়ক ধরে এগুলো শিকারপুর গ্রাম। সড়ক থেকে হাঁটা পথে পূর্ব দিকে এগুলে সবুজ ফসলের মাঠ। যেই মাঠে ধান চাষ হতো, সেখানে এখন কুলের চাষ হচ্ছে। গাছের ডালে ডালে ঝুলছে রঙিন কুল। কুলের ভারে যেন ডাল ভেঙে পড়ছে। কুল তোলায় ব্যস্ত উদ্যোক্তারা। কেউ কুল তুলছেন,কেউ কুল মেপে দিচ্ছেন ক্রেতাকে।
গ্রামের সুরুজ মিয়া বলেন, তিনি দীর্ঘদিন প্রবাসে ছিলেন। বয়স বাড়ায় তিনি দেশে ফিরে আসেন। দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠান। বাড়িতে অলস বসে থাকতে ইচ্ছে হয় না। কিছু একটা করতে চান। মোবাইল ফোনে ইউটিউব ঘেটে দেখেন কুল চাষ। তিনি স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার সাথে পরামর্শ করেন। পরামর্শ পেয়ে কুল কাজ শুরু করেন। চারা লাগানোর ৬মাসের মাথায় সফলতার মুখ দেখেন। তার দেখাদেখি পাশের সিদ্দিকুর রহমান ও রমিজ মিয়াসহ অন্যান্য কৃষকরাও কুল চাষ শুরু করেন। এখন কুলের অনেক চাহিদা। কুল না পেয়ে পাইকাররা রাগ করে চলে যান। বর্তমানে তিনি ৬৪শতক জমি চাষ করছেন। তিনি বলেন,এবছর তার ৮০হাজার টাকা খরচ হয়েছে। বিক্রি করেছেন দেড়লাখ টাকার কুল। মোট ৫লাখ টাকার কুল বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশা করছেন।
পাইকারি ক্রেতা নুরে আলম বলেন, পাশের লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজারে তাদের ফলের দোকান রয়েছে। তিনি পাইকারি কেজি ৮০টাকা দরে কুল কিনেছেন। ১০০/১২০টাকা দরে বিক্রি করবেন। এই কুল তাজা ও স্বাদ ভালো হওয়ায় চাহিদা বেশি,বিক্রি করতে বেশি সময় লাগে না।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সারোয়ার ভুইয়া বলেন,আমরা চেষ্টা করছি প্রচলিত ফসলের পাশাপাশি এখানে কিছু উচ্চমূল্যের ফসল চাষ করতে। সুরুজ মিয়াকে আমরা পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। তার দেখাদেখি অন্য কৃষকরাও কুল চাষে এগিয়ে আসেন। এ গ্রামের দুই একর মাঠে এখন কুল চাষ হচ্ছে। দিন দিন এই কুলের চাষ আরো বাড়বে।
ভবানীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন,আমার ইউনিয়নটি মূলত লতি চাষের জন্য বিখ্যাত। সারা দেশে এর সুনাম রয়েছে। সম্প্রতি শিকারপুরসহ আশপাশের গ্রামের মাঠে বিভিন্ন প্রকারের কুলের চাষ হচ্ছে। আশা করি এই কুলের চাষ আরো বাড়বে। কৃষক ও কৃষি বিভাগের সাথে পরামর্শ করে বিক্রয় কেন্দ্রের মাধ্যমে কুল বিক্রির ব্যবস্থা করবো।