কেমন বাংলাদেশ চান কুমিল্লার ছাত্রনেতারা


আল-আমিন কিবরিয়া ।।
কেমন বাংলাদেশ চাই? এদেশ হবে অন্যায়, অনিয়ম, লুটপাট, সন্ত্রাস, মূল্যস্ফীতি রোধ, ভোট চুরি বন্ধ, ক্ষমতার অপব্যবহার মুক্ত। এ বিষয়ে নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছে কুমিল্লার ছাত্রনেতারা। তাদের সবার দাবি বাংলাদেশ হবে সবার। গঠন হবে একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ। থাকবেনা ধনী গরিবের ভেদাভেদ। দল মত নির্বিশেষে সবাই কাজ করবে দেশের উন্নয়নে।
শান্তির বাংলাদেশ চাই
ছাত্রদল কুমিল্লা মহানগরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেছেন,২০২৫ সালের বাংলাদেশ হওয়া উচিত একটি সমৃদ্ধ, সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক। যেখানে প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। দেশের উন্নয়ন শুধু আর্থিক উন্নয়নের মাপকাঠিতে নয়! বরং সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং নৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও হতে হবে। এই স্বাধীন বাংলাদেশ হবে বৈষম্যহীন। যেখানে থাকবে না কোনো সামাজিক বৈষম্য। ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে একসঙ্গে। থাকবে না কোনো নিরাপত্তার ভয়। থাকবে না কোন বেকারত্ব। একজন শিক্ষার্থী তার যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবে। তরুণ প্রজন্ম শিক্ষা ও দক্ষতার মাধ্যমে উন্মোচিত করবে সম্ভাবনার দ্বার। অভিভাবকরা থাকবে তার সন্তান নিয়ে নিশ্চিন্তে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্বতঃস্ফূর্ত ভূমিকায় থাকবে। দেশের প্রতিটি এলাকাতেই কিশোর গ্যাং, মাদক, সন্ত্রাসী ও ইভটিজিং বন্ধ হবে। ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট, ঘুষ, দুর্নীতিসহ দেশ বিরোধী সকল কার্যক্রম বন্ধ হবে। এসব বন্ধ করতে পারলেই হবে হবে একটি শান্তির বাংলাদেশ।
মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কায়েম থাকবে
কুমিল্লা মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাছান আহমেদ বলেন,দীর্ঘদিন বাংলাদেশ বিভেদ আর বিভক্তির মধ্য দিয়ে গিয়েছে। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়েও ছিল টানাপোড়ন। অন্যায়-অনিয়ম, লুটপাট, সন্ত্রাস, মূল্যস্ফীতি, ভোট চুরি, ক্ষমতার অপব্যবহার ছিল নিত্যদিনের চিত্র। অতীত ও পুরনো দিনকে প্রত্যাখ্যান করে ছাত্র জনতা নতুন বাংলাদেশের সূত্রপাত করেছে। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো কেমন বাংলাদেশ চাই আমরা?
আমরা এমন একটি দেশের স্বপ্ন দেখছি যে দেশের মধ্যে থাকবে না অশান্তি, দুঃখ, দুর্দশা, বৈষম্য, অনিরাপত্তা, অন্যায়, অবিচার ও মানুষের চাপিয়ে দেওয়া বিধান দিয়ে মানুষেকে নিষ্পেষণ করা হবে না। বরং থাকবে শান্তি, সুখ- সমৃদ্ধি, সাম্য, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, সৌহার্দ্য, নিরাপত্তা, ইসলাম অনুসারে পরিচালনার ব্যবস্থা। মহান আল্লাহর সার্বভৌমত্ব কায়েম থাকবে। যে দেশের ব্যাপারে আল্লাহর রাসুল ভবিষ্যৎবাণী করেছেন এমন একটি সময় আসবে যে সময়ে মানুষেরা সানা থেকে হাজারা মাউত পর্যন্ত হেঁটে যাবে কিন্তু তাদের মনের মধ্যে আল্লাহর ভয় ছাড়া আর কোন ভয় থাকবে না। সেই দেশ আল্লাহর মেহেরবানীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। খোলাফায়ে রাশেদার সেই দেশের আলোকে আবারও আমরা একটা দেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখি। আমরা সেই দেশ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছি, দেখছি, দেখে যাব ইনশাআল্লাহ! এজন্য প্রয়োজন সততা দেশপ্রেম, সততা ও দক্ষতার সমন্বয় আর এই কাজটিই করে যাচ্ছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
দেশপ্রেম হবে উন্নয়নের হাতিয়ার
কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মাহমুদ হাসান তামিম বলেছেন,সবাইকে হতে হবে সচেতন। যেখানেই অন্যায়, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অন্যায়ের প্রতিবাদ করা শিখতে হবে। নিজেদের অধিকারের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। এখনই সময় আমাদের সচেতন হয়ে আগামী প্রজন্মকে একটি সুন্দর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ উপহার দেওয়া। সেই সঙ্গে আগামী প্রজন্মের কাছে তাদের নিজেদের অধিকারসচেতন হয়ে ওঠার স্পষ্ট বার্তা দেওয়ার। এ দেশে দিনদিন বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা। কর্মসংস্থানের অপ্রতুলতা, অনুন্নত শিক্ষাব্যবস্থা, তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষার অভাব সৃষ্টি করেছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা। এ সমস্যা থেকে আমাদেরকে মুক্ত হতে হবে। আমাদের সবার দেশপ্রেম হবে উন্নয়নের হাতিয়ার। এ দেশের নাগরিক হিসেবে আমিও স্বপ্ন দেখি একটি সুন্দর বাংলাদেশের।
নতুন দেশে সবাই থাকবে এক
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লার যুগ্ম আহবায়ক কাজী নাছির বলেছেন,নতুন বাংলাদেশ সবার। আমরা এমন এক বাংলাদেশ চাই! যে দেশে সকল মত, ধর্ম, বর্ণের মানুষ নিজের অধিকার পাবে। বাংলাদেশ প্রশ্নে সবাই থাকবে এক ও অভিন্ন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর থেকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বললেই ক্ষমতাসীনদের গুম খুন, নির্যাতন, শিকার হয়ে আসছে এ দেশের মানুষ। এই অত্যাচার থেকে মানুষকে মুক্ত রাখতে হবে। পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্ট সরকার ১৬ বছর এ দেশের মানুষের বাকশক্তি কেড়ে নিয়েছে। কিছু বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে জেলে বন্দি করে দিতো। আমরা এসব থেকে মুক্তি চাই। আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ দেখতে চাই। যে বাংলাদেশে আমরা সবাই কাঁধে কাঁধ ও হাতে হাত রেখে চলতে পারব। একজন নাগরিকের দৈনন্দিন চলাচলে কতটুকু নিরাপত্তা প্রয়োজন এই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলেই হবে নতুন বাংলাদেশ।