সশস্ত্র আওয়ামী লীগ কর্মীদের বাধার মুখে কুবি শিক্ষকরা

 

প্রতিনিধি।।
দেশব্যাপী শিক্ষার্থী হত্যা ও হয়রানির প্রতিবাদে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষকরা মানববন্ধনের আয়োজন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র কর্মীরা তাদের বাধা দেন। এতে ছয়জন শিক্ষকই দাঁড়াতে পেরেছেন এই মানববন্ধনে। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ে সংবাদ সংগ্রহে যেতে চাওয়া সাংবাদিকরাও বাধার মুখে পড়েন। বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম. আনিছুল ইসলামের সঞ্চালনায় এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষকরা হলেন- বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শীলা, নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহবুবুল হক ভূঁইয়া, ফার্মাসি বিভাগের শিক্ষক জয় রাজ বংশী, বাংলা বিভাগের প্রভাষক গোলাম মাহমুদ পাভেল।
সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরিন বলেন, মৌলিক অধিকার চাইতে গিয়ে যেভাবে শতশত শিক্ষার্থী, সাধারণ জনগণকে মেরে ফেলা হয়েছে, সেটা গণহত্যা। সেটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। এই নির্মম গণহত্যার বিচার চাই।
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. কামরুন নাহার শিলা বলেন, আমাদের আরো আগেই নামা উচিত ছিল। আমরা আসলে লজ্জিত। আমরা দেখেছি নিরস্ত্র শিক্ষার্থীদের ওপর কীভাবে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। এই যে একটা নৈরাজ্য অবস্থা তৈরি হয়েছে তার দ্রুত নিরসন চাই।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহবুবুল হল ভূঁইয়া বলেন, কর্মসূচিটি বেলা ১১টায় করার কথা থাকলেও আমরা করতে পারিনি। আমাদের অনেক সহকর্মীকে আটকে দেওয়া হয়েছে কোটবাড়িতে। আমরা কোন ব্যবস্থার মধ্যে বাস করছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তাদের ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না?
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পলিটেকনিক মোড়, ক্যাডেট কলেজ মোড় ও আনসার ক্যাম্পের সামনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সবধরনের যানবাহন চেক করছেন। যারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিমুখে যেতে চাইছেন তাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এ সময় তাদের হাতে দেশীয় অস্ত্র, শটগানসহ নানা অস্ত্র দেখা যায়।
আনসার ক্যাম্পের মোড়ে সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম টুটুল নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান করছেন। ক্যাডেট কলেজ মোড়ে গিয়ে দেখা যায় সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ নিয়াজ পাবেল নেতাকর্মীদের দাঁড়িয়ে আছেন।
ফোনে আহমেদ নিয়াজ পাবেল জানান, কোন শিক্ষককে তারা ফিরিয়ে দেননি। জামায়াত-বিএনপি যেন ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য তারা মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন।

এ ব্যাপারে গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, আমরা কোটবাড়িতে আসার পর কয়েকজন মানুষ আমাদের পথরোধ করে। আমরা শিক্ষক পরিচয় দিলেও নমনীয় হয়নি। আমাদেরকে শহরের দিকে চলে যেতে বলে।
কুমিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, একজন শিক্ষক জানিয়েছিলেন যে উনি আসতে পারছিলেন না। সাথে সাথে আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি।
সদর দক্ষিণ থানার অফিসার্স ইনচার্জ আলমগীর ভূঁইয়া বলেন, সরকার দলীয় লোকেরা শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আসতা বাধা দিচ্ছে এই ব্যাপারে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। আমি একটু আগে ঘুরে আসলাম এমন কিছু লক্ষ্য করিনি।