অবকাশ যাপনে গোমতীর পাড়

 

কুমিল্লার আদর্শ সদর ও বুড়িচং এলাকার গোমতী নদীর দুই পাড়ে প্রকৃতির বিছানো সৌন্দর্যে মুগ্ধ দর্শনার্থী। এখানে প্রতিদিন বাড়ছে দর্শনার্থী। বিশেষ করে ছুটির দিন গুলোতে এখানে দর্শনার্থীর হাট বসে। দর্শনার্থীদের মতে, নিরাপত্তা, শৌচাগার স্থাপন ও অবকাঠামোগত কিছু উদ্যোগ নিলে কুমিল্লার অবকাশ যাপনে নতুন ক্ষেত্র হতে পারে গোমতীর পাড়। এনিয়ে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদে উল্লেখ করা হয়,নতুন সমীক্ষা অনুসারে কুমিল্লায় জনসংখ্যা ৬২ লাখের কিছু বেশি। জনসংখ্যার পাশাপাশি নগরীতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে আকাশচুম্বী দালান, বহুমুখী শপিংমল। এসবের ভিড়ে যেন প্রশান্তির জায়গা গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। নগরীর অক্সিজেন খ্যাত ধর্ম সাগর দিঘির পাড়ে মানুষের ভিড়ে যেন পা ফেলার জায়গা নেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,ব্যস্ত ও জনপূর্ণ নগর ছেড়ে প্রকৃতি থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস খুঁজতে নগরবাসীর এখন পছন্দের জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে গোমতীর পাড়। বুড়িচং উপজেলার পালপাড়ার গোমতীর দুই পাড় হয়ে আদর্শ সদর উপজেলার শেষে বিবির বাজার ভারতীয় স্থল বন্দর। এর মাঝে মালাপাড়া, পালপাড়া, বাঁশপাড়া, টিক্কারচর, গোলাবাড়ি, শাহপুর ও ঝাঁকুনিপাড়া গুলোতে দর্শনার্থী আকৃষ্ট হচ্ছে। গোমতীর বহমান পানি, মাঝে ভেসে উঠা চরে সবুজ দুর্বা ঘাস, দুই পাশে কৃষকের সবুজ সবজি বাগান, পাড়ের আঁকাবাঁকা রাস্তার চোখ জুড়ানো দৃশ্য মন কাড়ছে নগরবাসীর।
বিশেষ করে বিকেল হলেই গোমতীর পাড়ে বাড়তে থাকে স্বস্তির অন্বেষণে বের হওয়া মানুষের সংখ্যা। গোমতীর পাড় থেকে সূর্যাস্ত দেখা, নদীর পানিতে পা ভিজিয়ে চা’য়ে চুমুক দেওয়া, পরিবার, স্বজন কিংবা প্রিয় মানুষকে নিয়ে গোমতীর চরে দক্ষিণা বাতাসে আড্ডা জমান প্রকৃতি প্রেমীরা। দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার জুড়ে এমন সবুজে ঘেরা পরিবেশে দেখা মিলে দর্শনার্থীদের। সপ্তাহে ছুটির দিন গুলোতে দর্শনার্থী সংখ্যা থাকে বেশি। বিশেষ করে টিক্কারচর ব্রিজে পা ফেলার জায়গা থাকে না।

গোমতী পাড়ের দর্শনার্থী বাড়ার সাথে সাথে সেখানে তৈরি হয়েছে ছোট ও মাঝারি আকারের ভ্রাম্যমাণ মুখরোচক খাবারের দোকান। সেখানে ফুচকা, চাপ, চটপটি, পিয়াজু, আলুচপ, বেগুনি, বুট, ঝালমুড়ি, চা, কফি মিলে।
তবে এর মধ্যে আশংকার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে গোমতী পাড়ে তরুণদের অনিয়ন্ত্রিত গতিতে মোটরসাইকেল প্রতিযোগিতা। অসচেতন ভাবে মোটরসাইকেল চালানোর ফলে ইতিমধ্যেই ঘটেছে বেশ কিছু দুর্ঘটনা। নিরাপত্তা, শৌচাগার স্থাপন ও অবকাঠামোগত কিছু উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। বিশেষ করে বেঞ্চ স্থাপন। এতে কুমিল্লার অবকাশ যাপনে নতুন মাত্রা যোগ করবে গোমতী।
এই বিষয়ে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, গোমতীর পাড়ে বেশ কিছু স্থান দেখার সুযোগ হয়েছে। শহরের অনেক মানুষ এখানে ঘুরতে যায়। আমরা কিছু রাইড স্থাপন করেছি। শৌচাগারসহ প্রয়োজনীয় বিষয় গুলো স্থাপনের চিন্তা আমাদের আছে।
আমরা মনে করি,মানুষ প্রকৃতির সান্নিধ্যে যেতে চায়। কুমিল্লা নগরীর গা ঘেঁষে গোমতীর পাড় সে চাহিদা পূরণ করছে। নিরাপত্তা, শৌচাগার স্থাপন ও অবকাঠামোগত কিছু উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। আমরা এবিষয়ে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশনকে দৃষ্টি দেয়ার আহবান জানাই।