অভিযুক্ত পেল কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদ; ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা

অফিস রিপোর্টার।।

নানা অভিযোগে অভিযুক্ত লিটন সরকারকে কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ দেয়া হয়েছে। এনিয়ে ক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডসহ থানায় অন্তত এক ডজন মামলা রয়েছে। লিটন সরকার কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বাগুর গ্রামের মৃত আবদুল মজিদ সরকারের ছেলে।

সূত্রমতে,লিটনের বিরুদ্ধে দেবিদ্বার উপজেলার নবিয়াবাদ গ্রামের মীর্জা বাহাদুর, আসমা বেগম দেবিদ্বার থানায় চাঁদবাজির মামলা দায়ের করেন। একই উপজেলার খাদঘর গ্রামের তাসলিমা বেগম তার বিরুদ্ধে চান্দিনা থানায় ছিনতাই ও ডাকাতির মামলা দায়ের করেন। আওয়ামী লীগ নেতাদের উপর হামলা, বরকামতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাংচুর এবং চাঁদাবাজির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সুলতানপুর গ্রামের মোঃ মিজানুর রহমান, দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাপ চন্দ্র পাল এবং ব্রাক্ষণখাড়া গ্রামের মানছুরা আক্তার কুমিল্লা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ৪ নং আমলী আদালতে মামলা দায়ের করেন। লিটন সরকারের বিরুদ্ধে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করার কারণে প্রয়াত জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ এম হুমায়ুন মাহমুদকে লাঞ্ছিত করা হয়। ২০১৬ সালের ৪ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় যাওয়ার পথে দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য লুৎফুর রহমান বাবুলের উপর হামলা করে তার হাত ও পা ভেঙ্গে দেয়।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য তানজির আহমেদ তুহিন বলেন, একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক সরবরাহকারী, উপজেলা নির্বাচন ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করার পরও কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো স্বেচ্ছাসেবক লীগের মতো সংগঠনের জেলার সাধারণ সম্পাদক করে উল্টো তাকে পুরস্কৃত করা হয়েছে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ দেবিদ্বার ও চান্দিনার মানুষ। সে বাগুর ও চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড থেকে দৈনিক ২ লক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করে। সন্ধ্যার পর বাগুরস্থ তার নিজস্ব কার্যালয়ে দৈনিক উত্তোলিত চাঁদার টাকা ভাগাভাগি করার পর মাদকের আসরে বসে।

অভিযোগের বিষয়ে লিটন সরকার বলেন,আমি জোর করে পদ আনিনি। মানুষের জন্য কাজ করেছি। করোনায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। দল পর্যক্ষেণ করে পদ দিয়েছে। কিছু মানুষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে। তিনি আরো বলেন, কিছু মামলা ছিলো। সেগুলো শেষ হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, বার বার পুলিশের হাতে আটক হলেও প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় বেঁচে যায় এই লিটন। ডজনখানেক মামলার আসামি লিটন। গত ২০১৯ সালের ৯ জুন পাঁচ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট ও অস্ত্রসহ ডিবি পুলিশের অভিযানে ক্রসফায়ারে নিহত হন তার আপন চাচাতো ভাই রুবেল সরকার ওরফে বোতল রুবেল। ওইদিন লিটন সরকার পালিয়ে জীবন রক্ষা করে। তার অপর চাচাতো ভাই সাদ্দাম সরকার ২০১৭ সালে মাদক মামলায় পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আটক হয়ে কারা ভোগ করেছে। এছাড়াও আরেক চাচাতো ভাই এমরান সরকার গত ২০২০ সালের ১৯জুলাই ইয়াবা ও ফেনসিডিলসহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন।