আখাউড়া পৌর মেয়রের মানবিকতা

 

মো. ফজলে রাব্বি, আখাউড়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া পৌরশহরের লাল বাজার রোডে সাত্তার-জাহানারা প্রতিপালন কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় দূর দূরান্ত থেকে নানা বয়সের কয়েক’শ নারী-পুরুষ খাবারের জন্য বসে আছেন। দুপুরের খাবার খেতেই এখানে জড়ো হয়েছেন তারা। এদের অনেকেই থাকার জায়গা নাই। রেলস্টেশনসহ পথে ঘাটে যখন যেখানে রাত সেখানেই মাথা গুঁেজ থাকে।

 

মানুষের কাছে চেয়ে চিত্তে খায়। এক বেলা খেলে আরেক বেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা নাই। এসব অভূক্ত মানুষের জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করেছে সাত্তার-জাহানারা প্রতিপালন কেন্দ্র। প্রতিপালন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ফখরুল ইসলাম ভূইয়া প্লেটে ভাত তরকারি দিয়ে প্রস্তুত করছেন। বেলা দেড়টার দিকে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল নিজ হাতে দুস্থদের মাঝে খাবারের প্লেট তুলে দেন।

 

এখানেই খেতে এসেছেন বয়োবৃদ্ধা রেজিয়া বেগম নামে এক নারী বলেন আমার স্বামী-সন্তান নাই। থাকার জায়গা নাই। ভিক্ষা করে যা পাই তা দিয়ে কোনমতে চলি। যখন যেখানে আশ্রয় পাই সেখানেই রাতযাপন করি। এখানে দুপুরের খাবার খেতে পেরে খুব উপকার হয়।

 

কথা হয় মাহবুব উল্লাহ ও রেজিয়া বেগম এসব কথা বলেন। একই কথা বলেন বাগান বাড়ির আয়েশা, সিলেটের বিশ^নাথের আব্দুল মান্নান। তারাও এখানে খেতে এসেছেন। গত ৬ মাস ধরে এখানে দুপুরের খাবার খাওয়ানো হচ্ছে।

 

জানা গেছে, আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনে বহু অসহায় উপস্থিত হয়ে ছিন্নমূল মানুষ বসবাস করে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অসহায় ছিন্নমূল মানুষ এ ষ্টেশনে অবস্থান নেয়। তারা একবেলা খেলে আরেক বেলা খাবারের ব্যবস্থা থাকে না। এসব অভূক্ত মানুষের কথা চিন্তা করে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল গত বছরের অক্টোবর মাসে তার প্রয়াত পিতা-মাতা সাত্তার-জাহানারা প্রতিপালন কেন্দ্র চালু করেন। ষ্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের একটি পরিত্যাক্ত ভবনে প্রতিপালন কেন্দ্রের কার্যক্রম চলছে। পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের নিজস্ব অর্থায়নে বর্তমানে সপ্তাহে তিন দিন দুপুরের খাবার দেওয়া হয়। প্রতিদিন দুই-আড়াইশ অসহায় ছিন্নমূল মানুষ এখানে খাবার গ্রহণ করেন। পালাক্রমে মাছ-মাংস, সবজি ডাল দিয়ে খাবার পরিবেশন করা হয়। পরবর্তীতে প্রতিদিন খাবার দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে সূত্রে জানা গেছে।

সাত্তার-জাহানারা প্রতিপালন কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, দুস্থ ছিন্নমূল অনাহারি মানুষের কথা চিন্তা করে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা চালু করেছি। এখানে শুধু খাবার নয়। ছোট ছোট ছিন্নমূল শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে খাবারের এক ঘন্টা করে পাঠদান করা হবে। তিনি বলেন, রেলওয়ের এ জায়গাটি বেদখল হয়ে গিয়েছিল। জায়গাটি আখাউড়া পৌরসভাকে লীজ দেওয়ার জন্য রেলওয়ের কাছে আবেদন করেছি। লীজ পেলে এখানে আরও বেশ কিছু সেবামূলক কার্যক্রম করার পরিকল্পনা রয়েছে।