আগামজাতের রোপা আমনের ফলনে খুশি কৃষক,বাড়বে সরিষা চাষ

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
আগামজাতের রোপা আমনে ভালো ফলন পেয়ে খুশি কুমিল্লার কৃষকরা। জাত গুলোর জীবনকাল স্বল্প হওয়ায় ভালো ফলনের পাশাপাশি সরিষা চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার কৃষককেরা রোপা আমনের আগাম জাতের ধান কাটতে শুরু করেছেন কার্তিক মাসের শেষ সপ্তাহে। ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৭৫, বিনাধান-১৭ ইত্যাদি নতুন জাত দখল করে নিচ্ছে ব্রি ধান ৪৯ ও স্বর্ণমসুরি ধানের মাঠ। তাছাড়া আবাদ বেড়েছে ব্রি ধান ৮৭ ও ব্রি ধান ৯৫ জাতের ধানের।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, রোপাআমন মৌসুমের শুরুতে বুড়িচং উপজেলার কৃষকদের মাঝে ব্রি ধান ৭১, ব্রি ধান ৭৫, ব্রি ধান ৮৭, ব্রি ধান ৯৫, ব্রি হাইব্রিড ধান ৪, ব্রি হাইব্রিড ধান ৬, বিনাধান-১৬, বিনাধান-১৭, বিনাধান-২০ ও বিনাধান-২২ জাতের ১ টন বীজ কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করে উপজেলা কৃষি অফিস। পুরাতন দীর্ঘ জীবনকালীন জাত গুলোর পরিবর্তে আগাম জাতের ধান আবাদের মাধ্যমে শস্য বিন্যাসে সরিষা চাষ অন্তর্ভুক্তির জন্য এ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়। জাত গুলোর মধ্যে এ বছর প্রথমবারের মতো ৬ হেক্টর জমিতে চাষ হওয়া ব্রি ধান ৭১ বেশি পছন্দ হয়েছে কৃষকদের। ১১৫ দিনে ভালো ফলন হওয়ায় ও জাতটিতে রোগ পোকার আক্রমণ কম হওয়ায় এই আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তাছাড়া ব্রি ধান ৭৫ জাতটি ৯৫ হেক্টর, ব্রি ধান৮৭ জাতটি ২৮৫ হেক্টর, ব্রি ধান ৯৫ জাতটি ৩১ হেক্টর ও বিনাধান-১৭ জাতটি ২১ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। রোপা আমন মৌসুমে মোট ৯২৮০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন অর্জিত হয়েছে বুড়িচং উপজেলায়। আগাম জাতের ধানে ফলন পাওয়া যাচ্ছে প্রতি হেক্টরে চাউলে ২.৮৭ টন থেকে ২.৯৮ টন পর্যন্ত। যা জাতীয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি।
উপজেলার পাহাড়পুর বেলবাড়ির কৃষক ওমর ফারুক জানান, আগাম জাত বিশেষ করে ব্রি ধান৭১ চাষ করে আমরা ভালো ফসল পেয়েছি। সাথে সময় কম লাগায় সরিষার চাষ করতে পারবো।
বুড়িচং উপজেলার রামপুর ব্লকের উপ-সহকারী সুলতানা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের কৃষি অফিসার মহোদয় মাঠে পরীক্ষামূলক আগামজাতের ধানের বীজ দিয়েছেন। আগামজাতের ধানে ভালো ফলন হয়েছে। এতে সরিষা চাষে কৃষক জমি খালি পাবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ বানিন রায় জানান, বুড়িচং উপজেলার কৃষকেরা সরিষা চাষে অভ্যস্ত ছিলেন না। ফলে ব্রি ধান ৪৯, ব্রি ধান৩২ ও স্বর্ণমসুরি ধানের প্রতি কৃষকদের আগ্রহ বেশি ছিল। সরিষা আবাদ বৃদ্ধির পরিকল্পনার অংশ হিসাবে আগাম জাতের ধানের বীজ সংগ্রহ করে কৃষকদের মাঝে বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। বেশ কয়েকটি জাত জাত যেমন ব্রি ধান৭১, বিনাধান-২০, বিনাধান-২২ প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে। কৃষকেরা জাত গুলো পছন্দ করছেন। যে জমি গুলো আগাম জাত করা যাবে সেগুলোকে সরিষা আবাদের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি।