আশুগঞ্জে মেয়াদোর্ত্তীণ ওষুধ সেবনে শিশুর মৃত্যু !

 পল্লী চিকিৎসক গ্রেপ্তার
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মেয়াদোর্ত্তীণ ওষুধ সেবনে শিশু আয়েশা মনি’র (০৪) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। নিহত আয়েশা উপজেলার দুর্গাপুরের চাতাল শ্রমিক মো. খোকন মিয়ার মেয়ে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক মোস্তাকিম বিল্লাহ্কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজারের আল আমিন মেডিক্যাল সেন্টারের স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসককে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি, সেই ওষুধ সেবনে শিশু মৃত্যুর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ্ (২৪) পার্শ্ববর্তী সরাইল উপজেলার টিঘর গ্রামের মোতাসিম বিল্লাহ্’র ছেলে। এর আগে গত সোমবার রাতে নিহত শিশু আয়েশার পিতা খোকন মিয়া বাদী হয়ে পল্লী চিকিৎসক মোস্তাকিমকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, গত সোমবার রাতে তার মেয়ে অসুস্থ হলে তিনি মেয়েকে নিয়ে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজারে অবস্থিত আল আমিন মেডিক্যাল সেন্টারে যান। এসময় ফার্মেসির স্বত্বাধিকারী পল্লী চিকিৎসক মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ্ শিশুটির শরীর দুর্বল এবং পেটে কৃমি হয়েছে জানিয়ে তাকে একটি ১শ’ মিলি ভিনসিনা সিরাপ (১ চামচ করে দিনে ৩ বার), একটি ১শ’ মিলি আপেলিন সিরাপ (১ চামচ করে দিনে ২ বার) ও একটি ১০ মিলি বেন-এ সিরাপ (১ চামচ ৭ দিন পরপর) খাওয়ার জন্য ওষুধের প্যাকেটের গায়ে নির্দেশনা লিখে দেন। উক্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী শিশু আয়েশাকে ওষুধ খাওয়ানোর পর সে আরো অসুস্থ হয়ে পড়ে।  তাকে মারাত্মক অসুস্থ অবস্থায় আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এসময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ফার্মেসি থেকে নেয়া ওষুধগুলো দেখে ১শ’ মিলি আপেলিন সিরাপটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে বলে শিশুটির পরিবারকে জানান।
আশুগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. বিল্লাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘নিহত শিশুর পিতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রজু করা হয়। পরে নিহত শিশুর লাশ ময়না তদন্তের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করাসহ অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক মো. মোস্তাকিম বিল্লাহ্কে গ্রেপ্তার করা হয়।’
আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূপুর সাহা বলেন, ‘নিহত শিশুকে সেবন করানো ১শ’ মিলি আপেলিন সিরাপটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও মৃত্যুর অন্য কারণও থাকতে পারে। শিশুটিকে সেবন করানো ওষুধগুলো জব্দ করে পরীক্ষার জন্য ঔষধ প্রশাসনের নিকট পাঠাতে পুলিশকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট, ওষুধগুলোর পরীক্ষার রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।’