আ’ লীগের বিরোধ; ভিক্টোরিয়া কলেজে ভাঙচুর

আমোদ প্রতিনিধি।।
কুমিল্লা শহরতলী ধর্মপুরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের বিরোধে আরও দুই দফা হামলা হয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালামাল লুট করা হয়েছে। ভাঙচুর করা হয়েছে ভিক্টোরিয়া কলেজে। এ ঘটনায় সোমবারও ওই এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন স্থানীয়রা। সোমবার ভিক্টোরিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম ছিলো। স্থানীয়দের ঝামেলা কলেজে এসে গড়ানোয় সবার মাঝে উদ্বেগ দেখা গেছে।২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার দিন আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের কোন্দলকে কেন্দ্র করে এমন অস্ত্র মহড়ার ঘটনা ঘটে।

inside post

জানা গেছে, আদর্শ সদর উপজেলার দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল হান্নান সোহেল ও ৩নং ওয়ার্ড সদস্য ফখরুল ইসলাম রুবেলের গ্রুপের মধ্যে নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। ফখরুল ইসলাম রুবেল ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য হলেও ব্যবসা করেন দুই ২নং ওয়ার্ডে। এ ওয়ার্ডের ধর্মপুর রেলগেট এলাকার কাছাকাছি তার একটি বাড়িও আছে। নগরীর টাউনহলে গ্রেনেড হামলা দিবসের জনসমাবেশে যোগদানের জন্য শহরতলীর আশপাশ থেকে লোকজন জড়ো করতে থাকেন ফখরুল ইসলাম রুবেল। এমন একটি সিসিটিভি ফুটেজ সোমবার ভাইরাল হয়েছে। পৌনে ৩টার দিকে ধারণকৃত ফুটেজে দেখা যায়, প্রচুর লোকজন নিয়ে রাস্তায় বন্দুক হাতে মহড়া দিচ্ছেন দুইজন। স্থানীয়রা তাদেরকে রুবেল ও চপল বলে উল্লেখ করেন। এছাড়া সিসিটিভির ক্যামেরা ভাঙতে দেখা যায় জনিকে। এক মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ভিডিওর শেষ প্রান্তে দেখা যায় কাউকে লক্ষ্য করে কেউ একজন গুলি ছুড়ছেন। প্রায় সাতঘণ্টা অস্ত্রের মহড়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গুলি ও অগ্নি সংযোগের ঘটনার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে। মাগরিবের পর আবারও অস্ত্র হাতে জড়ো হয় কয়েকজন। রোববার দুপুর ২টা থেকে শুরু হওয়া অস্ত্রের মহড়া থেমে থেমে রাত ৯টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। রাত ৮টার দিকে ভাঙচুর চালানো হয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ক্যানটিনে। প্রায় রাত ৯টা পর্যন্ত সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে কলেজের কবি নজরুল হলে প্রবেশের চেষ্টা করে হামলাকারীরা।
আবদুল হান্নান সোহেলের ভাই আবদুল মান্নান জানান, সবকিছু শান্ত হয়ে ওঠার পর মসজিদে মাগরিবের নামাজ আদায় করতে যাই। নামাজ শেষ করে বের হবার পর রুবেল ও চপল বন্দুক দিয়ে পিটিয়ে আমাকে আহত করে। মাগরিবের পর ধর্মপুর এলাকা কিছুটা শান্ত হয়ে উঠলেও রাত ৮টার দিকে একদল লোক সশস্ত্র অবস্থান নিয়ে ধর্মপুরে অবস্থিত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ডিগ্রি শাখার ক্যানটিন ও পাশের ফুচকা দোকানে ভাঙচুর চালায়। হামলাকারীদের একটি দল ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছেলেদের একমাত্র আবাসিক নজরুল হলে ব্যারিকেড দেয়। উত্তেজনকার পরিস্থিতির সংবাদ পেয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের জন্য কোতোয়ালি থানা ও পুলিশ সুপারকে অনুরোধ করেন।

 


বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীদের সাথে কলেজে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরোধ আছে। দুপুরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা নেতাকর্মীরাই রাতে কলেজে হামলা করে। এরপর গভীর রাতে ইউপি সদস্য সোহেলের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সকল মালামাল লুটে নেওয়া হয় বলে পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। এদিকে সোমবার বিকেল পর্যন্ত ধর্মপুর ও এর আশপাশের এলাকায় একদল লোক সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়।

 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহিদুর রহমান বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

আরো পড়ুন