ঈদ’ নাকি ‘ইদ’ ?
আমোদ ডেস্ক।।
বাংলা একাডেমির ‘আধুনিক বাংলা অভিধানে’ ‘ঈদ’ শব্দটির ভুক্তি রয়েছে দু’টি। এর মধ্যে একটি লেখা হয়েছে ‘ঈ’ ব্যবহার করে, অন্যটি ‘ই’ ব্যবহার করে। এর মধ্যে ‘ঈদ’কে প্রচলিত ও অসংগত বানান এবং ‘ইদ’কে সংগততর ও অপ্রচলিত বানান বলছে বাংলা একাডেমি। আর দুই ধরনের বানান নিয়েই এখন মুখর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ভাষাবিদরা বলছেন, মানুষের মধ্যে ‘সংশয়’ তৈরির প্রয়োজন নেই। সংস্কার করলেও উচ্চারণগত বিষয় মাথায় রেখেই সে সংস্কার করা উচিত।
বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানে ‘ইদ’ শব্দটির ভুক্তিতে বলা হয়েছে, ‘ইদ/ইদ্/[আ.]বি. ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের প্রধান উৎসব; (ইদুল ফিতর বা ইদুল আজহা); খুশি, উৎসব; ঈদ-এর সংগততর ও অপ্রচিলত বানান। ইদ মোবারক /ইদ্ মোবারক্/বি. ইদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে উচ্চারিত অভিবাদন।’ অন্যদিকে, অভিধানের ‘ঈদ’ ভুক্তিতে বলা হয়েছে, ‘/ইদ/[আ.]বি. ইদ-এর প্রচলিত ও অসংগত বানান।’ আবার বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধানে ‘ইদ’ শব্দের ভুক্তিতে নির্দেশ করা হয়েছে ‘ঈদ’ শব্দকে।
প্রচলিত ‘ঈদ’ শব্দের পাশাপাশি অভিধানে ‘ইদ’ শব্দের অন্তর্ভুক্তির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. শামসুজ্জামান খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি একটি বিদেশি শব্দ। আর বিদেশি শব্দ লিখতে ‘ঈ’ বা ‘ঈ’-কার নয়, ‘ই’ বা ‘ই’-কার লেখার নিয়ম। সে হিসেবেই বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাই ‘ঈদ’কে ‘ইদ’ও লেখা যাবে। তবে এই পরিতর্বনটি আমার একার সিদ্ধান্তে হয়নি। বোর্ড সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেউ এ বিষয়ে আপত্তি জানালে বোর্ডকে জানানো হবে।’
শামসুজ্জামান খান আরও বলেন, ‘এই পরিবর্তনে এত মাতামাতি করার কিছু নেই। তবে আমার মনে হচ্ছে, জামায়াত অথবা কোনও উগ্রবাদী মতাদর্শের লোকজনের বিষয়টি নিয়ে বেশ মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে।’
অভিধানে ‘ঈদ’-এর এমন সংস্কার নজরে আসার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। যুক্তিতর্কের বন্যা বয়ে যাচ্ছে ফেসবুকে। কেউ কেউ বাংলা একাডেমিকে নিয়ে ফেসবুকে ঠাট্টা করছেন। কেউ আবার ‘ঈদ’ বা ‘ইদ’— কোনোটিই না লিখে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন ‘Eদ’ লিখে। গঠনমূলক সমালোচনাও করছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন, বিদেশি শব্দ বলেই ‘ঈদ’ শব্দে ‘ঈ’-এর স্থানে ‘ই’ লেখা যাবে। কিন্তু ‘ঈ’ ব্যবহারের পেছনে তিনটি কারণ রয়েছে— শব্দের উৎস, অর্থ বিন্যাস ও উচ্চারণ।