উৎপাদনে ২য় কুমিল্লার মাছ,  ভূমিকা রাখতে পারছে না রপ্তানি আয়ে 

 প্রতিনিধি ।।

মিঠা পানিতে মাছ উৎপাদনে সারাদেশে কুমিল্লা জেলার অবস্থান দ্বিতীয়। জেলায় ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মাছের চাহিদা ছিল এক লাখ ৪৬ হাজার ৩৫৭ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় দুই লাখ ৮৪ হাজার ৪১ মেট্রিক টন। উদ্বৃত্ত থাকে এক লাখ ৪৭ হাজার ১৯৪ মেট্রিক টন মাছ।
এত কিছুর পরও কুমিল্লা থেকে গত অর্থবছরে রপ্তানি হয় মাত্র ৫০ মেট্রিক টন মাছ। এতে আয় হয় এক কোটি ৮৪ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এদিকে একই অর্থবছরে মৎস্য সম্পদ রপ্তানি করে সারাদেশে আয় হয় চার হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। কুমিল্লায় রপ্তানি আয় মোট আয়ের মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য চার তিন শতাংশ! অর্থাৎ জেলার চাহিদা মেটাতে পারলেও রপ্তানি আয়ে ভূমিকা রাখতে পারছে না কুমিল্লার মাছ।
শনিবার জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত জেলা মৎস্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লা আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানা যায়।
পাশেই বিবির বাজার স্থলবন্দর, কুমিল্লায় উদ্বৃত্ত মাছ চাহিদার তুলনায়ও বেশি। এত এত উদ্বৃত্ত মাছ থাকার পরও রপ্তানি আয় নগণ্য হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন জানান, যেকোনো কাজ বাস্তবায়নের জন্য ম্যান পাওয়ার দরকার। একটা চিন্তা বাস্তবায়ন আপনি তখনই করতে পারেন, যখন আপনার ম্যান পাওয়ার থাকে। আমাদের প্রচুর লোকবলের সংকট আছে। দশজন লোকের জায়গায় তিনজন লোক দিয়ে দশজনের কাজ আদায় করা সম্ভব নয়। তাছাড়া রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয়ের দরকার। সবগুলো কাজ একসাথে হয়ে উঠছে না বিধায় রপ্তানি আয় কম।
শরীফ উদ্দিন আরও জানান, কুমিল্লায় মৎস্য সম্পদ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান নেই। আমাদের কাছে যে তথ্য আছে তাতে দেখা যাচ্ছে ৩০-৪০ জনের মতো মধ্যস্বত্বভোগী আছেন, যারা রপ্তানিকারকদের কাছে কুমিল্লার মাছ পৌঁছে দেন।
কুমিল্লা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক আবদুস সাত্তার ও কুমিল্লা প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক নীতিশ সাহা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, কুমিল্লায় সরকারিভাবে চারটি রেণু উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আছে। পোনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আছে তিনটি। এছাড়া বেসরকারি হ্যাচারি আছে ৫৭টি। আগামী অর্থবছরে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা তিন দশমিক দুই তিন লাখ মেট্রিক টন। ২৩ জুলাই থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত চলবে মৎস্য সপ্তাহ। এবারের প্রতিপাদ্য, ‘নিরাপদ মাছে ভরবো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। ‘
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক আবদুস সাত্তার বলেন, বাংলাদেশে বিপন্নপ্রায় ৫৪ প্রজাতির দেশীয় মাছের মধ্যে ১৮টি মাছকে পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে।   মাছ উৎপাদনে প্রথম ময়মনসিংহ জেলা। কুমিল্লা জেলাকে প্রথম করতে আমরা কাজ করছি। পাশাপাশি তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারের সহায়তায় ব্যাপক কাজ করা হচ্ছে। উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কেউ বাধার মুখে পড়লে উপজেলা মৎস্য অফিসে যোগাযোগের অনুরোধ করছি।