করোনাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে ট্রাম্প স্ত্রীসহ করোনায় আক্রান্ত

আমোদ ডেস্ক।।

করোনাভাইরাসকে হরদম তুচ্ছ-তা চ্ছিল্য করা, এ নিয়ে রসিকতায় মেতে ওঠা এবং ভুল বার্তা ছড়াতে সিদ্ধহস্ত ট্রাম্পের শরীরেও শেষ পর্যন্ত বাসা বাঁধল ভাইরাসটি।

এই মহামারির সঙ্গে সারা দুনিয়া যখন লড়াই করা ও মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় রত, যুক্তরাষ্ট্রে তখনো কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ছে। করোনাভাইরাস থেকে মনোযোগ সরিয়ে আসন্ন নির্বাচন নিয়ে মগ্ন ট্রাম্প। অথচ তার দেশ এই ভাইরাসে জর্জরিত।

আর এখন, শুক্রবার, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শরীরেও ধরা পড়ল কোভিড-১৯। একইসঙ্গে তার স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পও আক্রান্ত।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ২১ জানুয়ারি। সে সময় চীন থেকে সারা দুনিয়ায় ভাইরাসটির ছড়িয়ে পড়া নিয়ে কম-বেশি সবাই সচেতন হয়ে উঠেছিল।

৩০ জুন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের কারণে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য খাতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে। একই দিন ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশের জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ব্যাপারে জোর দিলেও, পরের দুই মাস মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই বৈশ্বিক মহামারির প্রতি এক ধরনের তাচ্ছিল্যই দেখিয়েছেন।

২৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাম্প ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সকে করোনাভাইরাস ব্রিফিং টাস্ক ফোর্সের প্রধান হিসেবে নিযুক্ত করেন, যেখানে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত- এমন একজন বিশেষজ্ঞরই সামনে থাকার কথা।

২৬ ফেব্রুয়ারিতে যখন যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে এবং দেশজুড়ে ব্যাপক মাত্রায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে ভাইরাসটি, ট্রাম্প তখন বলেছিলেন, ‘সহসাই আমাদের দেশে আক্রান্তের সংখ্যা মাত্র ৫ জনে নেমে আসবে এবং এর কিছুদিনের মধ্যেই সংখ্যাটি নেমে আসবে মাত্র ১ কি ২ জনে।’

২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কোভিড-১৯’কে ডেমোক্রেটদের ‘নতুন ধাপ্পাবাজি’ হিসেবে অভিহিত করে জানান, এটি ‘অলৌকিকভাবে’ শিগগিরই মিলিয়ে যাবে।

এরপর ৯ মার্চ করোনাভাইরাসকে সাধারণ ফ্লু’র সঙ্গে তুলনা করেন তিনি।  ভাইরাসটির দাপটে অবশেষে ১৩ মার্চ দেশে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে বাধ্য হন ট্রাম্প।

২০ মার্চ হোয়াইট হাউসে করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের প্রাত্যহিক ব্রিফিংয়ে তিনি জোরের সঙ্গে ঘোষণা করেন, করোনার চিকিৎসায় ম্যালেরিয়ার ওষুধ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহার ‘ভীষণ কার্যকর’। ২৪ মার্চ পর আসন্ন ইস্টারকে যুক্তরাষ্ট্রের লকডাউন পরিস্থিতি তুলে নিয়ে সব কিছু খুলে দেওয়ার দিন হিসেবে ঘোষণা করেন ট্রাম্প, অথচ সেদিন দেশটিতে কোভিড-১৯ আক্রান্ত শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ২৩ এবং মৃতের সংখ্যা ৯৬২। এর পাঁচদিন পর করোনাভাইরাসকে ‘ফ্লু’ হিসেবে গণ্য করার মতো নিজ অবস্থান মারাত্মক পরিবর্তন করে এটিকে ‘ভয়ংকর’ হিসেবে অভিহিত করেন ট্রাম্প।