কুমিল্লার পার্লারে পার্লারে ২৫টি নকল প্রসাধনী, গ্রেফতার ১
আমোদ রিপোর্টার।।
বাজারে প্রচলিত কুমারিকা তেল হয়ে গেছে কণ্যারিকা নামে। ফেয়ার এ্যান্ড লাভলী হয়ে গেছে ফেসিয়াল লাভলী। সুগন্ধি ফগ হয়ে গেছে ফগস। বিএসটিআই’র অনুমোদনহীন নকল ক্যামিকেল দিয়ে তৈরি করা হতো এসব প্রসাধনী। বিক্রির জন্য খুবই চাকচিক্যভাবে মোড়ক তৈরি করা হয়। মোড়কে নাম লিখা হয় সু²ভাবে। টার্গে ট করা হতো বিউটি পার্লার। নগরীর ৪০টির ও বেশী বিউটি পার্লারে এ প্রসাধনী বিক্রি হচ্ছে। খুব মনোযোগ দিয়ে না দেখলে বুঝার উপায় নেই প্রসাধনীগুলো নকল। গত দু’বছরের অধিক সময় ধরে কুমিল্লা নগরীর মোগলটুলি এলাকা থেকে বাজারজাত করা হয় এসব প্রসাধনী। সোমবার কারখানাটিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসন যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। কারখানাটিকে সিলগালা করা হয়। মালিককে ছয় মাসের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এখানে পাঁচটি দেশী, ২৫ টি বিদেশি প্রসাধনীর নকল পণ্য তৈরি করতেন আবু সুফিয়ান। তিনি নিজেই মালিক, নিজেই টেকনিশিয়ান।
আবু সুফিয়ানের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নবাবপুর এলাকায়। নগরীর মোগলটুলি এলাকায় তিন কক্ষের ভাড়া বাসায় এসব পণ্য তৈরি করেন। আবু সুফিয়ান জানান, ঢাকা থেকে ক্যামিকেল ও অন্যান্য অনুষঙ্গ এনে তিনি এসব প্রসাধনী তৈরি করতেন। তিনি নিজেই কারখানার মালিক। নিজেই ক্যামিস্ট। পণ্য বাজারজাত করতেনও নিজেই। তিনি ট্রেড মার্কের জন্য আবেদন করেছেন। ব্যবসা পরিচালনার জন্য আর কোন অনুমোদন পত্র তার নেই।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মোঃ আছাদুল ইসলাম বলেন, মোগলটুলি হাইস্কুলের পেছনের একটি বাড়িতে দু’টি কক্ষে তৈরি হচ্ছে প্রসাধনী। এসে দেখি তিনজন মহিলা প্রসাধনী মোড়কজাত করছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে এসব প্রসাধনী। কারখানায় কোন ল্যাব নেই। প্লাস্টিকের ড্রামে রাখা আটা-ময়দা। পাশে খোলা ড্রামে তেল ও ক্যামিকেল। ড্রামের আদা-ময়দা, তেল ও ক্যামিকেল মিশ্রণ করার একটি যন্ত্র। এগুলো ব্যবহার করেই তৈরি করা হতো প্রসাধনীগুলো। পাঁচটি দেশী, ২৫টি বিদেশি প্রসাধনীর ক্যাটাগরির নকল পণ্য তৈরি করতেন আবু সুফিয়ান।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডাঃ মজিবুর রহমান বলেন, সঠিক উপায়ে ব্যবহার না হলে যে কোন ক্যামিকেল স্বাস্থ্যর জন্য ক্ষতিকর। মোগলটুলিতে যেভাবে প্রসাধনী তৈরি করা হয়েছে সেগুলো স্বাস্থ্যর জন্য হুমকিস্বরুপ। এগুলো ব্যবহারে চর্মরোগ এবং ক্যান্সার হওয়ার আশংকা বেশি।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্র্রেট আবু সাঈদ জানান, কারখানার মালিকের কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রসাধনী তৈরি করতেন। নেই কোন ল্যাব। নেই কোন কেমিষ্ট। বিভিন্ন দেশী বিদেশী প্রসাধনীর আদলে নকল প্রসাধনী তৈরি করতেন। মালিক আবু সুফিয়ানকে ছয়মাসের জেল ও ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করি।