কুমিল্লার প্রথম নারী স্কোরার লাইজু

কাগজ কলমে আঁকেন খেলার চিত্রনাট্য
মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ। মাঠে চলছে মালেকা মমতাজ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও শৈলরাণী দেবী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। মাঠের পশ্চিমপাশে দর্শকদের জটলা। খেলার আয়োজক কুমিল্লা পূর্বাশা ও মধুমিতা কচিকাঁচার মেলা। হীরক জয়ন্তী উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়। জটলার পাশে আয়োজকসহ অন্যরা অবস্থান করছেন। তাদের মাঝে একজন নারী বসে আছেন। তিনি কুমিল্লার প্রথম নারী স্কোরার। একজন নারীকে স্কোরিং করতে দেখে তাকে অনেকে দেখছেন আগ্রহ ভরে। এই দৃশ্য ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকের। এরপর তিনি একাধিক খেলার স্কোরিং করেন। তিনি নাসরিন সুলতানা লাইজু। লাইজু কাগজ কলমে আঁকেন খেলার চিত্রনাট্য। তিনি স্কোরিংয়ে এগিয়ে যেতে চান আরো অনেক দূর।
পরিবারের সূত্র জানায়,কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার বানাশুয়া গ্রামের বাসিন্দা কৃষি কর্মকর্তা অহিদুর রহমান ও হোসনেয়ার বেগমের ৫মেয়ে ২ ছেলের মধ্যে তিনি ৫ম। তিনি ফরিদা বিদ্যায়তন,সোনার বাংলা কলেজ হয়ে ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে অর্থনীতিতে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। পরিবারের মধ্যে লাইজুর মেঝ বোন আইরিন সুলতানা ভালো ভলিবল খেলতেন।
নাসরিন সুলতানা লাইজু জানান, তিনি স্কুলে ভলিবল খেলতেন। গালর্স গাইডের সাথে যুক্ত ছিলেন। স্কুল প্যারেডে নেতৃত্ব দিতেন। তার খেলার প্রতি খুব আগ্রহ ছিলো। কুমিল্লা পূর্বাশা ও মধুমিতা কচিকাঁচার মেলার সাথে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত আছেন। হীরক জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত খেলার সময় নিজেকে জড়িত করতে চেয়েছেন। স্কোরিংয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন। ক্রীড়া সংগঠক বদরুল হুদা জেনু সহযোগিতা করেন। প্রথম দিন ভুল হচ্ছিল। দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ছিলেন। জেনু তাকে বললেন- তুমি পারবে। পরের দিন থেকে ভালো লাগতে শুরু করে। পুরো টুর্নামেন্টে স্কোরিং করেন। স্বামী সাইফুল ইসলাম মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। তার লাইজুর ক্রীড়াঙ্গনে যুক্ত থাকার বিষয়ে সমর্থন রয়েছে। প্রশিক্ষণ ও সুযোগ পেলে স্কোরিং নিয়মিত করতে চান বলে জানান লাইজু।
সাবেক ক্রিকেটার রফিকুল ইসলাম সোহেল বলেন, কুমিল্লা অগ্রসর জেলা। তবে এখানে এখনও নারী আম্পায়ার ও নারী স্কোরার তৈরি হয়নি। লাইজুর এই পথচলা নারীদের জন্য উৎসাহব্যাঞ্জক। সুযোগ পেলে লাইজুরা আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ম্যানেজার বদরুল হুদা জেনু বলেন,স্কোরিং খুব সহজ কাজ নয়। তাকে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ ধরে রখতে হয়। ব্যাটসম্যান কত রান করলেন,কতক্ষণ মাঠে ছিলেন, তার জুটিতে কত রান হয়েছে। বোলার কত উইকেট পেয়েছেন ইত্যাদি খুঁটিনাটি তুলে ধরতে হয়। এদিকে লাইজুর খেলার প্রতি আগ্রহ রয়েছে। তাই তাকে উৎসাহিত করেন। সে কুমিল্লার প্রথম নারী স্কোরার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের আরো এগিয়ে দেয়া যেতে পারে।
