কুমিল্লার সাতশ’ বিদেশি শিক্ষার্থীর মুখে বাংলা

মহিউদ্দিন মোল্লা ।।
কুমিল্লার প্রায় সাতশ’ বিদেশি শিক্ষার্থী বাংলা ভাষায় কথা বলেন। গলায় বাংলায় সুর তোলেন করেন। খাচ্ছেন বাঙালি খাবার। কুমিল্লার রসমালাই ও খাদি পোশাকেরও প্রেমেও তারা মজেছেন। তাদের মাধ্যমে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ছে বাংলা ভাষা। সাথে কুমিল্লাসহ দেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। কুমিল্লার চারটি মেডিকেল কলেজে পড়েন এই শিক্ষার্থীরা। এখানে পড়ছেন ভারতের মেঘালয়,মনিপুর, কাশ্মীর, অন্ধ্রপ্রদেশ, হরিয়ানা,ঝাড়খান্ড, উড়িষ্যা,কলকাতাসহ বিভিন্ন রাজ্যের শিক্ষার্থী। এছাড়া নেপাল,ভুটান, মালদ্বীপ, ফিলিস্তিনসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা পড়ছেন। এর আগে এখান থেকে পড়ে গেছেন জার্মানি, আরব আমিরাত, পাকিস্তান ও শ্রীলংকার শিক্ষার্থীরা।
সূত্রমতে,কুমিল্লা জেলায় ৫টি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। তার মধ্যে কুমিল্লা আর্মি মেডিকলে কলেজে কোন বিদেশি শিক্ষার্থী নেই। কুমিল্লা সরকারি মেডিকেল কলেজে ২১ জন , ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজে তিন শতাধিক, ময়নামতি মেডিকেল কলেজে ২৩৬, সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজে রয়েছে অর্ধ শতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ফিলিস্তিনের গাজা শহরের বাসিন্দা মোহান্নাত আল হারাজিন ও হাসান মোসলেহ। তাদের ভাষা আরবি। কুমিল্লা এসে তারা বাংলা শিখেছেন। এখানকার খাবার তাদের প্রিয়।
এদিকে ময়নামতি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ভারতের উত্তর প্রদেশের সৈয়দ মোমেন ইকবাল। তার ভাষা উর্দু।


ভালো গান গাইতেও পারেন তারা। তারা বলেন, বাংলা ভাষা শিখতে প্রথমে সমস্যা হয়েছিলো। পরে শিক্ষক ও বন্ধুদের সহযোগিতায় শিখেছি। এখানের ভাষা মধুর। চলে গেলে এখানের বন্ধু ও খাবার খুব মিস করবো। কুমিল্লার খাদি ও রসমালাই আমাদের অনেক প্রিয়। কেউ শুনিয়ে দিলেন- ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদেরই বসুন্ধরা.. .। কেউ শোনালেন- আমার মায়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি,আমি কি ভুলিতে পারি. . .।
ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. শাহ সেলিম বলেন, ভারত ও নেপাল থেকে আসাদের বাংলা বলায় তেমন সমস্যা হয়না। একটু সমস্যা হয় ভারতের তামিলনাড়– এলাকার শিক্ষার্থীদের।
ময়নামতি মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী ও অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা.নাজমুস সাদাত বলেন, বিদেশি শিক্ষার্থীদের রোগীর সাথে কথা বলতে স্থানীয় ভাষা জানা প্রয়োজন। তাদের আমরা ভাষা শিখতে সহযোগিতা করি।
কুমিল্লা সরকারি মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. মোহাম্মদ ইজাজুল হক বলেন, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিদেশি শিক্ষার্থীরা পড়ছে। তাদের মাধ্যমে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতি বিশে^ ছড়িয়ে পড়ছে।