কুমিল্লায় নগরীর চকবাজারে অস্ত্রের মহড়া

অফিস রিপোর্ট

কুমিল্লা নগরীর ব্যবসায়িক কেন্দ্র চকবাজারে প্রকাশ্যে দিনে-দুপুরে দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও অস্ত্রের মহড়া দেখা গেছে। এসময় পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্র হাতে নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষের ১ মিনিট ৯ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ঘন্টাখানেক দোকানপাট বন্ধ থাকে। এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। সোমবার এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখে সহিদুর রহমান সজিব (৩০) নামে একজনকে পিস্তলসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ।


পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, নগরীর চকবাজার এলাকায় স্থানীয় রাশেদ ও রবিনের মধ্যে আধিপত্যসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। রবিবার দুপুর ২টার দিকে উভয় গ্রুপের ৪০-৫০ জন পিস্তল, রাম-দা, চাপাতি, ছেনি, রড, হাতুড়ি, লাঠি নিয়ে চকবাজার বিদ্যুৎ অফিস গলিতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, এসময় স্থানীয় রাজ্জাক নামের এক ব্যক্তি তার লোকজন নিয়ে রাশেদের পক্ষ হয়ে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মাঠে নামে। উভয় গ্রুপের সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও লাঠির আঘাতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজনকে প্রকাশ্যে পিস্তল উচিয়ে এদিক-ওদিক ছুটাছুটি করছে।
চকবাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, চকবাজার বাসস্ট্যান্ড, জুয়া ও মাদক ব্যবসায় আধিপত্য নিয়ে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় আতঙ্কে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রায় এক ঘন্টা বন্ধ করে রাখা হয়। এসময় গলির ভেতর থেকে গুলির আওয়াজ শোনা যায়। পথচারীরা প্রাণভয়ে ছুটাছুটি করেন।
এই বিষয়ে রবিন বলেন, আবদুর রাজ্জাক একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার কাজের বিরোধিতা করায় তিনি এ হামলা চালান। কিছুদিন আগেও তিনি একই কারণে আমার উপর হামলা চালান। আবদুর রাজ্জাক ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে ৫ জনকে আহত করে।
এসব অভিযাগ প্রসঙ্গে আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমি মাদক ব্যবসায়ী নয়। তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। তারা আমাদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছে।
চকবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক কায়সার হামিদ জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনার সময়কার একাধিক ভিডিও ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে, এগুলো দেখে অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করতে অভিযান চলছে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বলেন, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের গ্রেফতার ও অস্ত্র উদ্ধারসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য- প্রকাশ্য দিবালোকে গত ২২ নভেম্বর কুমিল্লা নগরীর পাথুরিয়া পাড়া এলাকায় কাউন্সিলর সৈয়দ মোঃ সোহেল ও তার সহযোগী হরিপদ সাহাকে গুলিতে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার চারমাস পর পাশের এলাকা নগরীর চকবাজারে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অস্ত্রের মেলা বসে।