কুমিল্লায় শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় দাখিল পরীক্ষাকেন্দ্র স্থানান্তর

 

আমোদ প্রতিনিধি।।

শিক্ষকের ওপর হামলার ঘটনায় কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল পরীক্ষাকেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়েছে। সেটি নগরীর ইউসুফ হাইস্কুলে নেওয়া হয়েছে। কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকদের বদলে কুমিল্লা জিলা স্কুল, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও ইউসুফ হাইস্কুলের শিক্ষকেরা অন্য পরীক্ষাগুলো নেবেন বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসা পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

 

কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্রসচিব মো. আবদুল মতিন বলেন, সোমবার বেলা ১১টায় দাখিলের পৌরনীতি, কৃষিশিক্ষা, গার্হস্থ্যবিজ্ঞান, উর্দু, ফার্সি, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষার সময় নির্ধারণ ছিল। পরীক্ষা শুরুর ৪৫ মিনিট আগে শিক্ষকেরা মাদ্রাসা ফটকের সামনে দাখিল পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করছিলেন। এ নিয়ে কয়েকজন পরীক্ষার্থী শিক্ষকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। একপর্যায়ে ওই পরীক্ষার্থীরা শিক্ষকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক কামরুল ইসলাম শিকদার মাথায় গুরুতর আঘাত পান।
এই ঘটনার পর কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওই কেন্দ্রে পরীক্ষা দিতে আসা দৌলতপুর দারুল আমান হাতিমিয়া আলিম মাদ্রাসা, ইটাল্লা দাখিল মাদ্রাসা ও ভুতুয়া শ্রীপুর মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাঁধে। খবর পেয়ে কুমিল্লার স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মোহাম্মদ শওকত ওসমান ও আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা ঘটনাস্থলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শান্ত করেন। পরীক্ষা শেষে মারামারির অভিযোগে দৌলতপুর দারুল আমান হাতিমিয়া আলিম মাদ্রাসা, ইটাল্লা দাখিল মাদ্রাসা ও ভুতুয়া শ্রীপুর মাদ্রাসার ছয়জন পরীক্ষার্থীকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে এনে মুচলেকা নিয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কুমিল্লা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মো. আবদুল মতিন বলেন, আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত দাখিল পরীক্ষা হবে। আরও চারটি বিষয়ের পরীক্ষা বাকি। এই পরীক্ষাগুলো কুমিল্লা ইউসুফ হাইস্কুলে হবে। আলিয়া মাদ্রাসা পরীক্ষাকেন্দ্রে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার ১৭টি মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছিল।

 

কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, পরীক্ষার নীতিমালা ও মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের নীতিমালা মোতাবেক পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের আগে দেহ তল্লাশি করা হয়। যেন পরীক্ষার হলে পরীক্ষার্থীরা মুঠোফোন, বই নিতে না পারে। তল্লাশি কেন করা হচ্ছে এই কারণে শিক্ষকের ওপর হামলা করা হয়েছিল। মানবিক কারণে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তবে পরীক্ষাকেন্দ্র স্থানান্তর করা হয়েছে।