কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচন; এক ডজন আ’লীগ নেতা,বিএনপি নির্বিকার

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা জেলা পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ডজন খানেক আওয়ামী লীগ নেতা। তবে বিএনপি এই নির্বাচন নিয়ে নির্বিকার। তফসিল ঘোষণার পরপর মনোনয়ন প্রত্যাশীর সমর্থকরা ফেসবুক প্রচারণায় নেমে পড়েছেন। কেউ সংবাদ সম্মেলন করে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। কেউ কেন্দ্রে লবিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ফোরামে শুরু হয়েছে কথা লড়াই। কেউ অন্যকে ইঙ্গিত করে বলেছেন,উনাকে ১৭উপজেলার মানুষ চিনে নাকি। কিংবা উনি দায়িত্ব পালন করার সময় কি অনিয়ম করেছেন সব মানুষ জানে। দল ক্ষমতায় থাকায় বেঁচে গেছেন ইত্যাদি। এছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা প্রশাসক ও চেয়ারম্যান হয়েছেন তারা কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের। এবারও কি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ না উত্তর আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাবে?
মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় আছেন বর্তমান প্রশাসক ও সাবেক চেয়ারম্যান নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অবঃ) আবু তাহের, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মফিজুর রহমান বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজমুল হাসান পাখি, জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য,জনসংখ্যা ও পরিবারকল্যাণ সম্পাদক ডা. এ বি এম খোরশেদ আলম, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হামদর্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবদুল মান্নান জয়, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার, কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আবুল বাসার প্রমুখ।
বর্তমান প্রশাসক আবু তাহের বলেন,সততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছি। আমার বাকী কাজ সম্পন্ন করতে আবারও সুযোগ চাইবো। মনোনয়ন চাইবো আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার কাজের মূল্যায়ন করবেন।
ড. আবদুল মান্নান জয় বলেন, জীবনভর বঙ্গবন্ধুর আদর্শে নিজেকে পরিচালিত করেছি। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে কাজ করেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারবো।
ডা. এ বি এম খোরশেদ আলম বলেন, ছাত্র জীবন থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করছি। চিকিৎসা পেশা দিয়ে মানুষকে সেবা দিচ্ছি। এবার আরো বড় পরিসরে মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মানুষের জন্য আরো বেশি কাজের সুযোগ দিবেন বলে আশা করছি।
আতিক উল্লাহ খোকন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাঠের রাজনীতি করছি। কুমিল্লা সদর আসনের সংসদ সদস্য আ ক ম বাহ্উাদ্দিন বাহারের সম্মতি নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। আশা করি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার রাজনৈতিক অবদানকে মূল্যায়ন করবেন।
সুশাসনের জন্য নাগরিক(সুজন) কুমিল্লার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, মনোনয়ন প্রত্যাশী সবাই একই দলের নেতা। কেউ দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন করবেন কিনা। শেষ পর্যন্ত নির্বাচন হবে কিনা? এদিকে কুমিল্লা জেলা পরিষদে পূর্বে চেয়ারম্যান হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তারা মানুষের আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাতে পারেননি। যিনি জেলা পরিষদকে আরো গতিশীল করতে পারবেন এবার তেমন যোগ্য ব্যক্তি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোক।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুল হক মুজিব এমপি বলেন, যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী তাদের সবাই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকেই মনোনয়ন দিবেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন বলেন,আমরা নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের আন্দোলনে রয়েছি। বর্তমান সরকারের অধীনে আমরা কোন নির্বাচনে যাবো না।
উল্লেখ্য- আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে আলহাজ্ব ওমর ফারুককে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করে। এরপর প্রথমবারের মতো ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচন অুনষ্ঠিত হয়। ঐ সময় নৌবাহিনীর সাবেক প্রধান আবু তাহের দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপনকে হারিয়ে বিজয়ী হন।