কুমিল্লা থেকে রংপুর, ভাড়া মাত্র ৩০ টাকা!

সাইফুল ইসলাম সুমন।।
কুমিল্লা থেকে রংপুর জেলা যেতে সাধারণত খরচ হয় ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা, সময় লাগে প্রায় একদিন। তবে কুমিল্লা নগরী থেকে আরেকটি রংপুর যেতে মাত্র ৩০ টাকা খরচ হয়!
এখানে রংপুর বলতে দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলা শহর বোঝানো হয়নি, বরং কুমিল্লার ভেতরে লুকিয়ে থাকা একটি ছোট্ট গ্রামের নাম রংপুর। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ৩নং দক্ষিণ দুর্গাপুর ইউনিয়নের অন্তর্গত এই গ্রামটি স্থানীয়দের কাছে পরিচিত হলেও বাইরের মানুষের কাছে এটি বিস্ময়ের বিষয়।
বাস্তবে, কুমিল্লা শহরের কান্দিরপাড় থেকে অটোরিকশায় ২০ টাকায় খেতাসারে পৌঁছানো যায়। সেখান থেকে আরেকটি অটোতে ১০ টাকায় যাওয়া যায় এই রংপুর গ্রামে।
রংপুর গ্রামটি আয়তনে ছোট, তবে বৈচিত্র্যে ভরপুর। এক কিলোমিটারেরও কম এলাকাজুড়ে প্রায় ২০০০ মানুষের বসবাস। গ্রামের চারপাশে রয়েছে মদিনাগর (পশ্চিমে), সাতরা (উত্তরে), দৌলতপুর ও ধর্মপুর (পূর্বে) এবং বলরামপুর (দক্ষিণে)।
গ্রামে রয়েছে ৩টি মসজিদ এবং ২টি নুরানী মাদ্রাসা। এটি একটি শান্তিপূর্ণ ও গ্রামীণ পরিবেশে ঘেরা জনবসতি।
এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষই প্রবাসী। তাঁদের প্রেরিত অর্থে পরিবার চলে এবং গ্রামটির অর্থনীতি সচল থাকে। স্থানীয়ভাবে কেউ কেউ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গ্রামে আছে ২টি ফার্মেসি, ২টি চায়ের দোকান, ৩টি মুদি দোকান, একটি ওয়ার্কশপ এবং একটি ফার্নিচারের দোকান রয়েছে।
গ্রামের রাস্তাঘাট পাকা এবং চলাচলের উপযোগী। গৃহনির্মাণেও রয়েছে আধুনিকতার ছোঁয়া। এখানে রয়েছে ২টি মাটির ঘর, ২টি টিনের ঘর এবং বাকি সব বিল্ডিং।
গ্রামের নাম রংপুর হওয়ায় অনেকেই প্রথমবার শুনে বিভ্রান্ত হন। তবে এই নামই গ্রামের একটি বিশেষ পরিচিতি তৈরি করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এমন নামের মিল থাকলেও কুমিল্লার এই রংপুরের গল্পটা একেবারে আলাদা।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. হাসান জানান, রংপুর গ্রামের নাম শুনে বাইরের অনেকেই ভুল ধারণা করেন। কেউ কেউ মনে করেন, এটি উত্তরাঞ্চলের রংপুর জেলা। আবার কেউ কুমিল্লা শহর থেকে মাত্র ৩০ টাকায় রংপুর পৌঁছানোর কথা শুনে অবাক হয়ে যান। এ বিভ্রান্তি হলেও এতে গ্রামের নাম চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে বলে মনে করেন তিনি।
আঁখি রকমারি স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আলমগীর হোসেন বলেন, গ্রামের অধিকাংশ মানুষ প্রবাসে থাকায় দোকানগুলো মূলত পরিবারগুলোর দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটায়। তিনি জানান, গ্রামে ফার্মেসি, চায়ের দোকান, মুদি দোকান ও ওয়ার্কশপ থাকায় এখানকার মানুষ খুব বেশি বাইরে যেতে হয় না। উন্নত রাস্তাঘাট ও প্রবাসী আয়ের কারণে এখানকার জীবনমান ভালো।
