কুমেক হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স চক্রের প্রতারণায় তদন্ত কমিটি
অফিস রিপোর্টার।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ(কুমেক) হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স চক্রের প্রতারণার ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এছাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ১৪মার্চ কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ওই রোগীকে বৃহস্পতিবার ভোরে সিট থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন হাসপাতালে লোকজন কম থাকে। জরুরি বিভাগের তথ্যমতে, ভর্তি সময় ওই রোগী জীবিত ছিলেন। এখন তারা কী জীবিত রোগী নিয়েছেন, না মৃত; সেটা এখনও বলতে পারছি না। এ ঘটনা তদন্তের জন্য হাসপাতালের ডা. সোহেল, ডা. আবু বকর ও ডা. কাইজারকে নিয়ে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা আগামী তিন দিনের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন। হাসপাতালের কেউ ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত আছে কিনা সেটাও তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার ভোরে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রোগী মাহাবুল অ্যাম্বুলেন্স চক্রের প্রতারণার শিকার হয়ে চিকিৎসাবিহীন মারা যাওয়ার ঘটনায় হাসপাতালের পক্ষ থেকেই কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। ১৩ মার্চ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করা হয়- কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের রোগী মাহবুবুলকে (২০) চিকিৎসকের বিনাঅনুমতিতে ও অগোচরে বেসরকারি একটি অ্যাম্বুলেন্স (ঢাকা মেট্রো-চ-৭১৩০৭২) কর্তৃক হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ বিষয়টি তদন্তপূর্বক উক্ত অ্যাম্বুলেন্সের চালকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণেরও অনুরোধ করা হয় সাধারণ ডায়েরিতে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, কুমিল্লার পুলিশ সুপারসহ অত্র হাসপাতালের ক্যাজুয়ালিটি বিভাগের ইনচার্জ, ওয়ার্ড মাস্টার ইনচার্জ এবং হাসপাতালের সহকারী পরিচালককে এর অনুলিপি দেয়া হয়েছে। পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত দরখাস্তও করেছেন হাসপাতালের পরিচালক। দরখাস্তে তিনি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদারকরণ এবং হাসপাতাল এলাকা থেকে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স সমূহ জরুরি ভিত্তিতে সরিয়ে দেয়ার আবেদন করেন।
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার ভোরে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের দেবিদ্বারে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে একটি বাসের ১৫ যাত্রী আহত হয়। ওই ঘটনায় আহতদের মধ্যে ১২জনকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়। ভর্তি হওয়া গুরুতর আহত বাস যাত্রী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার উত্তর বাঙ্গরা গ্রামের শাহিন মিয়ার ছেলে মাহবুবুল আলম। একটি অ্যাম্বুলেন্স চক্র হাসপাতালের চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া মাহবুবুলকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে তার পরিবারকে ফোন দেন টাকার জন্য। তারা জানান, রোগীকে ঢাকা নিতে হবে ৩০ হাজার টাকা পাঠান। স্বজনরা এসে দেখেন হাসপাতালের সামনের অ্যাম্বুলেন্সে মাহবুবুল মৃত।