চকরিয়ায় বাসের আঘাতে বিধ্বস্ত দুই পরিবার

সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম।।
কক্সবাজারের চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীর ঢালা এলাকায় বাসের আঘাতে কেড়ে নিয়েছে স্ত্রী ফারজানা মজুমদার লিজা, শাশুড়ি রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী, শ্যালিকা ফারহানা মজুমদার টিজা, মা রুমি বেগম ও বোন সাদিয়া হক পাটোয়ারীর প্রাণ। এই খবরে শোক নেমে আসে উদয় পাটোয়ারীর বাড়ি চৌদ্দগ্রাম পৌরসভাধীন সান্দিশকরা ও শ্বশুরবাড়ি পাশ্ববর্তী ফালগুনকরা গ্রামে। ঘাতক বাসের আঘাতে মাইক্রোবাস বিধ্বস্ত হওয়ার সাথে সাথে বিধ্বস্ত হয়েছে দুটি পরিবার। বৃহষ্পতিবার পৃথকভাবে চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সান্দিশকরা ও ফালগুনকরা গ্রামে জানাযা শেষে দুই কবস্থানে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয় নিহতদের। এদিকে উদয় পাটোয়ারর একমাত্র শিশু সন্তান সামাদ পাটোয়ারী ও শ্যালক শাহেদ মজুমদার লিশানসহ চিকিৎসাধীন রয়েছেন হাসপাতালে। দুই পরিবারের কেউ কবরে কেউ হাসপাতালে, এখানে স্বজনদের জন্য কান্নার মানুষও নেই!
৩৬ বছরের প্রবাস জীবন উদয় পাটোয়ারীর শ^শুর আবদুল মন্নান মজুমদারের। স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে থাকার জন্য নির্মাণ করেছেন পাকা বাড়ি। আজ মন্নান মজুমদারের সেই ঘর ফাঁকা, সন্তানরা কেউ নেই। ৫ সদস্যের সংসারে স্ত্রী ও দুই মেয়ে হারিয়েছেন তিনি চকরিয়ার দুর্ঘটনায়। একমাত্র ছেলে হাসপাতালে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। দীর্ঘ সংসার জীবনে হঠাৎই একা হয়ে যাওয়া বাকরুদ্ধ আবদুল মন্নান ঘরে তালা দিয়ে নিজেই গিয়েছিলেন স্ত্রী সন্তানদের লাশ আনতে। তাদের জানাযায়ও মুখ খুললেন না, হাউমাউ করে কাঁদেননি। তবু তার ব্যথায় ব্যথিত করেছে সবাইকে। দেবার মতোন শান্ত¡নাও যে নেই তার জন্যে।
তবে স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলের বউকে হারানো উদয় পাটোয়ারীর বাবা এনামুল হক পাটোয়ারী কথা বললেন, তাদের জন্য দোয়া চেয়েছেন। নানু, দাদু, খালা, ফুফু ও মা হারানো একমাত্র নাতিটার কথাও বললেন।
গত বুধবার ঢাকা থেকে স্ত্রী, ছেলে, শ্যালিকা ও শ্যালককে নিয়ে মাইক্রোবাস যোগে কক্সবাজার ভ্রমণে যাওয়ার সময় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গভীর রাতে মা, ছোট বোন ও শাশুড়িকে সঙ্গে নেন বিদেশি একটি এয়ারলাইন্সে চাকরি করা উদয় পাটোয়ারী। পরিবারের সদস্যদের হয়তো দেখাতে চেয়েছিলেন সমুদ্রের বিশালতা, কাটাতে চেয়েছিলেন সুন্দর সময়। কিন্তু কাছাকাছি গিয়েও তাদের দেখা হলোনা সমুদ্র।
