চক্ষু হাসপাতালের ভিতরে বাইরে রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্য

আবু সুফিয়ান রাসেল॥
কুমিল্লা আলেখারচর চক্ষু হাসপাতাল। বছরে মহাসড়ক সংলগ্ন এ সেবাকেন্দ্র থেকে দেশের ৫০-৬০ লক্ষ মানুষ সেবা গ্রহণ করেন। সম্প্রতি হাসপাতালের বহির্বিভাগে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। হাসপাতালের বাহিরের ফার্মেসিতে থেকে ডাকাডাকি। এতে চিকিৎসাকদের কার্যক্রমে বিঘœ হয়, বিভ্রান্তিতে পড়েন গ্রাম থেকে আসা রোগীরা। কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়ম মানছেন না রিপ্রেজেন্টেটিভরা।

সূত্রমতে, বাংলাদেশ অন্ধ কল্যাণ সমিতির অঙ্গ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনষ্টিটিউট অব কমিউনিটি অফথালমোলজী (বিকো) ও চক্ষু হাসপাতালের মাধ্যমে পরিচালিত কুমিল্লা আলেখারচর চক্ষু হাসপাতাল। অগ্রদূত চিকিৎসক একুশে পদক প্রাপ্ত প্রয়াত জোবায়েদা হান্নান ১৯৯৪ সাল এ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন।

 

সরেজমিনে গত ডিসেম্বর তিনবার ও ৯ জানুয়ারি এ হাসপাতালের রিপ্রেজেন্টেটিভদের দৌরাত্ম্যের বিষয়টি নজরে আসে। সকাল ৯টায় বহির্বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ১৫-২০ জন ঔষধ শিল্পের প্রতিনিধি। দরজায় থাকা লোককে দিচ্ছেন কলম, প্যাড। হরহামেশা প্রবেশ করছেন ডাক্তারের চেম্বারে।

হসপাতালের সামনের ফার্মেসিতে দাঁড়িয়ে ডাকাডাকি করছেন রোগীদের। আবার রোগীর ব্যবস্থাপত্রের ছবি তোলার জন্য করেন টানাটানি।

 

হাসপাতালের সামনের দোকান ভূঁইয়া অপটিকস এন্ড মেডিসিনের স্বত্বাধিকারী মো. জাবেদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা ডাকাডাকি হাকাহাকি করি না। যার যার কোম্পানির ঔষধ বিক্রির জন্য রিপ্রেজেন্টেটিভরা এ কাজটি করেন।

 

বাংলাদেশ মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ অ্যাসোসিয়েশন (ফারিয়া) কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. রমিজুল হক ভুঁইয়া বলেন, প্রতিটি ওষুধ কোম্পানি তাদের প্রতিনিধিদের মাসিক বিক্রির টার্গেট দেয়। যদি তা না করতে পারে, তাহলে বেতন কমে যায়। কখনও চাকরিও চলে যায়। যার কারণে ডাক্তারদের কাছে বারবার যেতে হয়। কথা বলতে হয়। যেহেতু মার্কেটে নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসছে, তাই ডাক্তারদের নিকট সে বার্তা পৌঁছানোর জন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিছু প্রতিনিধি নিয়ম ভঙ্গ করে কাজ করে কোম্পানির টার্গেট পূরণ করার জন্য।

 

কুমিল্লা অজিতগুহ মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী তামান্না আক্তার বলেন, ডাক্তার কথা বলতেছে আমার সাথে। তারা (রিপ্রেজেন্টেটিভরা) কথা বলতেছে ডাক্তারের সাথে। হাসপাতাল থেকে বের হতে এমনভাবে ডাকাডাকি করছে। আমরা লজ্জায় পড়ে যাই, বিভ্রান্ত হই।

বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধকল্যাণ সমিতি কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা. এ কে এম আবদুস সেলিম বলেন, রিপ্রেজেন্টেটিভদের ভিজিট টাইম হলো শনিবার-মঙ্গলবার। সেটা সকাল থেকে ১০টার পূর্ব পর্যন্ত। তারা নিয়ম মানছে না। আমরা মাসিক সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করবো।