চৌদ্দগ্রামে প্রধান শিক্ষক ছাড়া চলেছে ৬৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়

সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম।।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ৬৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। এসব শূণ্যপদে সহকারি শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া সহকারি শিক্ষকের পদশূন্য রয়েছে ৭৮টি। যার ফলে দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান। দেশে শিক্ষার ভিত্তি বলে বিবেচিত প্রাথমিক শিক্ষায় এমন শিক্ষক সংকটে ক্ষতির মুখে পড়ছে শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের ১৭৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৬৪টি বিদ্যালয়ে বিভিন্ন মেয়াদে নেই প্রধান শিক্ষক। সহকারী শিক্ষকদেরকে ‘চলতি দায়িত্ব’ অথবা ‘ভারপ্রাপ্ত’ হিসেবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক কার্যক্রম ও পাঠদান একসঙ্গে সামলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন এই শিক্ষকরা। তাঁদের ওপর সৃষ্টি হয়েছে অতিরিক্ত কাজের চাপ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন সহকারী শিক্ষক বলেন, ‘বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক না থাকলে কোন শৃঙ্খলা থাকে না। অনেক সহকারী শিক্ষকই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের নির্দেশনা মানতে অনীহা প্রকাশ করেন। শিক্ষককরা চলেন নিজের ইচ্ছেমতো। এতে ক্লাস পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটে। শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা থেকে।
উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের হিলাল নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সুনীল চন্দ্র শীল জানান, গত তিন বছর থেকেই এই বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। একা দুই দিক সামলাতে হচ্ছে।
প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকা মুন্সিরহাট ইউনিয়নের খিরনশাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক কবির হোসেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন গত দুই বছর থেকে। তিনি বলেন, প্রশাসনিক কাজ করতে গিয়ে ক্লাস নিতে সমস্যা হয়।
উপজেলা শ্রীপুর ইউনিয়নের নালঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা হোসনে আরা জানান, দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি নিয়মিত ক্লাস নিতে হয়। এতে বেড়ে গেছে কাজের চাপ। একটা করতে গেলে আরেকটা ঠিকমতো হয়না।
প্রধান শিক্ষক সংকট নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অভিভাবকরা। উপজেলা কাশিনগর ইউনিয়নের হিলাল নগর গ্রামের শাখাওয়াত হোসেন জানান, আমার ছেলে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। গত এক বছর যাবত শুনে আসছি স্কুলটিতে প্রধান শিক্ষক নেই। ঠিকমতো পড়া লেখা হচ্ছে না।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল হল তালুকদার বলেন,’প্রধান শিক্ষক শূন্য পদে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। ইতিমধ্যে সরাসরি নিয়োগ প্রক্রিয়া সার্কুলারের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে প্রধান শিক্ষক শূন্য পদগুলো অচিরেই পূরণ হবে।’
