জমির বিরোধে খালাকে দৌড়িয়ে পিটিয়েছে ভাগিনারা, ভিডিও ভাইরাল
আমোদ প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভুলইন উত্তর ইউনিয়নের বড়তুলা গ্রামে জমির বিরোধে খালাকে দৌড়িয়ে পিটিয়েছে ভাগিনারা। এঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়,এক নারীকে বাঁশ দিয়ে দৌড়ে দৌড়ে পেটাচ্ছেন কয়েকজন লোক। এসময় ওই নারী ‘‘ও মাগো মা, ও মাগো, আমারে মাইরালাইলো গো’’ বলে আর্তনাদ করেন। এসময় নারীর সাথে থাকা তার ছেলেকেও মারধরের ঘটনা ঘটে। এমন নির্যাতনের একটি ভিডিও ফুটেজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর তিন দিন হাসপাতালে ছিলেন ভুক্তভোগী নারী ও তার ছেলে। হসপাতাল থেকে ফিরে ঘটনার ছয়দিন পর ৮ অক্টোবর ৬জনের নাম উল্লেখ করে লালমাই থানায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী নারী।
মামলার আসামিরা হলেন, নির্যাতনের শিকার নারীর বোনের বড় ছেলে ও স্থানীয় ইউপি সদস্য দেলওয়ার হোসেন (৪২), মো. পরান (২৫), মো. জামাল হোসেন (৩৮) ও আনোয়ার হোসেন (৪০)। তাদের বাবা মো. আব্দুস ছোবহান (৭০) ও দেলোয়ারের কর্মচারী মো. আলী মিয়াসহ অজ্ঞাত ৫ জন।
জানা গেছে, নির্যাতনের শিকার ওই নারীর নাম মোসাম্মৎ মাজেদা বেগম। তিনি নির্যাতন করা যুবকেরা ওই নারীর বড় বোনের ছেলে। জায়গা জমির বিরোধ নিয়েই ঘটনার সূত্রপাত।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, মাজেদার সাথে বড়তুলা মৌজায় ৯ শতক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ তার বোন ও বোনের ছেলেদের সাথে বিরোধ চলে আসছে। এর আগেও তাকে মারধর করার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার দিন ২ অক্টোবর মাজেদা এবং তার ছেলে ওমর ফারুকসহ জমিতে সবজি উঠানোর জন্য যাচ্ছিল। এসময় তারা লাঠি, দা, ছেনি নিয়ে মাজেদা ও তার ছেলেকে আক্রমণ করে। তারা মাজেদাকে কিল ঘুষি লাথি দেয়। ৮ সেকেন্ড ও ৫৪ সেকেন্ডের দুইটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক মাজেদা নামের ওই নারীকে বাঁশ দিয়ে দৌড়ে দৌড়ে পেটাচ্ছেন। এসময় ওই নারী একবার এদিক আরেকবার ওদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। এবং উপস্থিত স্থানীয়দের কাছে গিয়ে প্রাণ ভিক্ষা চান কিন্তু কেউই তার সাহায্যে এগিয়ে আসেনা। এসময় তার ছেলে ওমর ফারুকের মুখে অস্ত্র দিয়ে আঘাত করতেও দেখা যায়।
নির্যাতনের শিকার মাজেদার ছেলে ওমর ফারুক বলেন, স্থানীয় ইউপি সদস্য আমার খালাতো ভাই দেলোয়ারের নির্দেশে তার তিন ভাই, তার বাবা ও তার কর্মচারী আমার আর আমার মাকে মেরেছে। এর আগেও তারা আমাদের বহুবার মেরেছে। আমাদের এই জায়গা নানা আমার বাকি তিন খালাসহ সবাইকে দিয়ে গেছে। দেলোয়ার ও তার মা আমাদের জায়গা দখল করে খাচ্ছে। তাদের নির্যাতনের ভয়ে কেউ কিচ্ছু বলেনা। পরে তারা সবাইকে হুমকি দেয়। স্থানীয়রাও তাদের নিয়ে আতঙ্কে আছে।
এই ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও অভিযুক্ত দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার খলার সাথে আমাদের এই জমির বিরোধ দীর্ঘদিনের। তারা এই জমি বিক্রি করে এখন অস্বীকার করছে। সেদিন তারা প্রথমে আমার ভাই পরানকে মেরেছে। তারপর সে সেখান থেকে কল দিলে আমার অন্য ভাইরা সেখানে যায়। এরপরের ঘটনাতো ভিডিওতেই আছে। তারা এটা পরিকল্পনা করে করেছে।
এই বিষয়ে লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আইয়ুব বলেন, আমরা ঘটনার পরই মামলা নিয়েছি। আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছে। আমরা মেডিক্যাল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি। রিপোর্টসহ আমরা একটি তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেব।