ডাইনিং কিচেন ছাদে সবুজ অরণ্য

নগরীতে শিক্ষক-চিকিৎসক দম্পত্তির গাছ বাড়ি
মহিউদ্দিন মোল্লা ।।
কুমিল্লা নগরীর ছাদে বসেছে রঙের মেলা। ফুল,ফল ও সবজির নানা রঙের সমাহার। এমন রঙিন বাগান দেখা গেছে নগরীর ধর্মসাগর পশ্চিম পাড়ের একটি বাসায়। শুধু ছাদ নয় ভবনের নিচ থেকে ওপরে। বাসার সিঁড়ি থেকে শুরু করে ডাইনিং টেবিল,কিচেন রুমসহ সর্বত্র গাছের ছড়াছড়ি।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, ছয় তলার বাসার নাম গ্রিন ক্যাসল। নিচ থেকে ভবন বেয়ে উপরে উঠে গেছে বাগান বিলাস ফুল গাছ। গেট দিয়ে ঢুকতে ইনডোর গাছের সারি। সিঁিড়তে,বাসার ভেতরে ও ছাদে গাছ আর গাছ। যেন গাছবাড়ি। ছাদে গাছের পরিচর্যা করছেন কালিকাপুর আবদুল মতিন খসরু সরকারি কলেজর অধ্যক্ষ মো. মফিজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা.শামীমা আক্তার রেখা। কেউ পানি দিচ্ছেন। কেউ কাটার দিয়ে ঢাল ছেটে দিচ্ছেন। লাল,গোলাপি,হলুদ,নীলসহ নানা ফুলের সমাহার। রয়েছে নানা রকম গোলাপ ও জবার প্রজাতি। কিছু গাছে ফল ধরেছে। হালকা বাতাস বইছে। কয়েকটি নাম না জানা পাখি শব্দ করে এখানে ওখানে উড়ে বেড়াচ্ছে।
অধ্যক্ষ মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, গাছ না থাকলে কেমন জানি বাসা মরুভূমি মনে হয়। দেশে-বিদেশে যেখানে যাই গাছ সংগ্রহ করি। আমাদের বাগানে হাজারো প্রজাতির গাছ আছে। বাসাটি দেখতে স্বজন ও প্রতিবেশীরা আসেন। আমরা বিভিন্নজনকে গাছ উপহার দেই। এছাড়া টপ ফ্লোরে গাছ লাগালে বাসা ঠান্ডা থাকে। সবুজ নগরায়ন হয়। এছাড়া বাগানে নিজেদের দারুণ সময় কাটে।
ডা.শামীমা আক্তার রেখা বলেন, সিলেট মেডিকেল কলেজের ছাত্রী ছিলাম। পড়ার সময় কোথাও পিকনিকে গেলেও গাছ সংগ্রহ করতাম। বন্ধুরা বলতো- তুই যেখানে যাস ঠিকই একটা গাছ খুঁজে নিবি। যত ব্যস্ত থাকি বাগানে না এলে শান্তি লাগে না। গহনা থেকে গাছের প্রতি আগ্রহ বেশি। দেশের এমন কোন জেলা নেই যেখান থেকে গাছ আনিনি। বেশি সুবিধা হয়েছে আমার স্বামীরও গাছ লাগানোর নেশা রয়েছে।
নগরীর বাগানি মোবারক হোসেন বলেন,আমারও ছাদে বাগান আছে। তবে তাদের মতো এত বেশি কালেকশন নেই। এখানে এসে নিজেকে সমৃদ্ধ করি। যেন আরো বড় বাগান করতে পারি।
কুমিল্লা গাডের্নার্স সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. মোহাম্মদ আবু নাঈম বলেন,নগরীতে সবারই ছাদ বাগান করা উচিত। এতে নগরীর পরিবেশ শীতল থাকবে। এত ব্যস্ততার মাঝেও অধ্যাপক মফিজুর রহমান ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা.শামীমা আক্তার রেখা বাড়িকে সবুজে অরণ্য করে রেখেছেন। এরকম বড় বাগান নগরীতে কম দেখা যায়। তাদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অন্যদেরও এমন বাগান করা উচিত।