তরুণদের উদ্যোগে বদলাচ্ছে বিসিকের দৃশ্যপট


মহিউদ্দিন মোল্লা ।।
কুমিল্লা বিসিক শিল্প নগরী। নাম বললেই চোখের সানে ভেসে উঠে একটি কর্মমুখর পরিবেশ। উৎপাদন আর উন্নয়নের যত গল্প। এর সাথে সেখানের জলাবদ্ধতা,ভাঙ্গা সড়ক,ভরাট ড্রেন, সড়ক বাতির অপতুলতা,নিরাপত্তাহীনতার দৃশ্যও ভেসে উঠতো। সেই দৃশ্য আগের থেকে কমতে শুরু করেছে। কর্তৃপক্ষের সাড়া পেতে দেরি হওয়ায় নিজেরাই কাজে নেমে পড়ছেন। বিসিক,কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি কাজে করছেন তরুণ উদ্যোক্তারা। এনিয়ে তারা একটি সংগঠন গড়ে তুলেছেন। তাদের সংগঠনের নাম তরুণ উদ্যোক্তা পরিষদ(ইয়েস)। তাদের উদ্যোগে কমছে দুর্ভোগের চিত্র।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,বিসিক কার্যালয়ের সামনের ড্রেনের ময়লা তুলছেন কয়েকজন শ্রমিক। তদারকি করছেন তরুণ উদ্যোক্তা ইজাজ আহমেদ খান,মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন। তারা ২০২৪সালের নভেম্বর মাস থেকে এই কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া তারা কিছু স্থানে লাইটিং ও সিসি টিভি লাগিয়েছেন। নিরাপত্তার জন্য টহলের ব্যবস্থা করেন। তারা শিল্প মালিকদের সহায়তায় এসব কাজ করছেন।
ইয়েসের সভাপতি ইজাজ আহমেদ খান বলেন,আমাদের বিসিক একটি বিশেষায়িত এলাকা। এখানে ১২মাস জলাবদ্ধতা লেগে থাকতো। ড্রেন গুলো ভরাট হয়ে আছে। পানি সরার ব্যবস্থা নেই। কর্তৃপক্ষের সেবা সময় মতো পাওয়া যচ্ছে না। এতে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হচ্ছে। এখানে মালিক সমিতি থাকলেও তাদের অনেকে বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় আগের সেই উদ্যোম নেই। তাই আমরা তরুণরা ইয়েস সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করি। আমাদের এখানে ২০ হাজার ফিটের বেশি ড্রেন আছে। তার মধ্যে ১৫হাজার ফিট সংস্কার করেছি। ড্রেনের সাথে লাইটিং,সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সিটি করপোরেশন ও বিসিকও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবেন বলে জানিয়েছেন।
রয়েল ফুডস ফ্যাক্টরির ব্যবস্থাপক মো. আবু সুফিয়ান বলেন, বিসিক এলাকায় রাস্তাঘাট,ড্রেনেজ ও জলাবদ্ধতার সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিসিক ও সিটি করপোরেশনের বাইরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তরুণরা যে কাজ করছেন তা ব্যতিক্রম। তাদের উদ্যেগের কারণে আমাদের দুর্ভোগ অনেক কমেছে।
মালাই সুইটস এন্ড বেকারির সত্ত্বাধিকারী খোকন সরকার বলেন, আমাদের ব্যবসার বয়সে এরকম ভালো উদ্যোগ আর দেখিনি। তাদের এই উদ্যোগকে মহৎ বলে মনে করি। জলাবদ্ধতা ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তরুণরা কাজ করছে। এখানে আগে কোমর সমান পানি হতো। ড্রেন সংস্কার হওয়ায় জলাবদ্ধতা অনেক কমেছে।
বিসিক কুমিল্লার ডিজিএম মুনতাসীর মামুন বলেন,বিসিক এলাকাটি নিচু। বৃষ্টি হলে এখানে পানি জমে যায়। পানির আউটলেটটি রেললাইনের পাশে। সেই স্থানে সমস্যা থাকায় পানি সরতে পারছে না। সেটি সিটি করপোরেশন এই বছর করে দিবে বলে জানিয়েছে। কাজটি শেষ হলে আমাদের জলাবদ্ধার সমস্যার আর থাকবে না। তিনি আরো বলেন, এখানের ৫০ভাগ সড়ক ও ড্রেনের কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। বাকি গুলোও সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে করা হবে। এদিকে বিসিকের যারা ব্যবসা মালিক রয়েছেন তাদের ৩য় প্রজন্ম ইয়েসের এই তরুণরা। তাদের কাজ গুলো ব্যাপক ইতিবাচক। তাই আমরা তাদের সহযোগিতা করছি। তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় করে বিসিককে এগিয়ে নিচ্ছেন। তাদের উদ্যোগের কারণে এখানে ব্যবসা সম্প্রসারিত হবে, যা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।