তিনদিন আগে একেবারে বাড়িতে ফিরলেন নাবিক সাদেক !

 

চট্টগ্রামে জাহাজে অগ্নিকাণ্ড
এক ঘণ্টা আগেও পরিবারের সাথে কথা বলেন
তৈয়ুবুর রহমান সোহেল।।
প্রায় ৪০ বছর ধরে বাংলার সৌরভ জাহাজে চাকরি করতেন সাদেক মিয়া (৬০)। তিনি কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার কাশিপুর গ্রামের ইউনুস মিয়ার ছেলে। তার বড় ভাই ছোয়াব মিয়াও চাকরি করতেন জাহাজে। তিনি বছর দুয়েক আগে চাকরি থেকে অবসরে যান। ছোট ভাই সাদেকের চাকরি শেষ হওয়ার কথা চলতি সপ্তাহেই। তিন-চারদিন পরেই একেবারে বাড়িতে চলে আসার কথা ছিল। তিনি বাড়িতে একেবারেই চলে আসছেন। তবে বেঁচে নয়, লাশ হয়ে।
শুক্রবার দিনগত রাত ১২টা ৫০মিনিটের দিকে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় জাহাজে বিস্ফোরণে অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে। এসময় জাহাজ থেকে অন্যান্য নাবিকেরা নিরাপদে নেমে যেতে পারলেও সাদেক মিয়া লাফ দিয়ে সমুদ্রে পড়ার পর অচেতন হয়ে পড়েন। এরপর তার নিথর মরদেহ উদ্ধার করে নৌবাহিনী।
শনিবার সকালে সাদেকের মৃত্যুর খবর শুনতে পান বাড়ির লোকজন। আত্মীয়স্বজনরা বাড়িতে ভিড় জমাতে থাকেন।
সাদেকের ছেলে সালাহউদ্দিন জানান, বাবা দুর্ঘটনার এক ঘণ্টা আগেও পরিবারের সবার সাথে ভিডিওকলে কথা বলছিলেন। এটিই ছিল পরিবারের সাথে তার শেষ কথা। অনেক অল্প বয়সে তিনি চাকরিতে যোগ দেন। গত ২২ সেপ্টেম্বর তিনি বাড়ি আসেন। একটি বিয়ের দাওয়াতে অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম চলে যান। তার চাকরির বয়স শেষ। জাহাজের তেল আনলোড করা শেষ হলে চলতি সপ্তাহেই তিনি বাড়ি চলে আসতেন। জীবনে অনেক পরিশ্রম করেছেন। বাড়িতে এসে বিশ্রাম করতে চেয়েছেন। কিন্তু আমাদের তিন ভাই, এক বোনকে এতিম করে তিনি না ফেরার দেশে চলে গেছেন।
সাদেক মিয়ার বাল্যবন্ধু পার্শ্ববর্তী কৈরাশ গ্রামের ছায়েদুল হক জানান, সর্বশেষ কুমিল্লা থেকে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলে দুই বন্ধু একসাথে চা পান করি, আড্ডা দিই। যাওয়ার বেলায় সে আমাকে বলেছিল, সাবধানে থাকিস। আজ সে-ই নেই। এ কথা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে।