দুইজনের কক্ষে ১০জন, পাঠদান পাঠাগার অডিটরিয়ামে

কুমিল্লা নার্সিং কলেজ

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজে আবাসিক হোস্টেলের দুর্ভোগে রয়েছেন শিক্ষার্থী। এছাড়া রয়েছে শ্রেণী কক্ষ ও শিক্ষক সংকট। হোস্টেল সংকটে দুইজনের কক্ষে থাকছেন ১০জন ছাত্রী। এদিকে শ্রেণী কক্ষ সংকটে,ক্লাস চলে পাঠাগার ও অডিটয়িামে। এতে বিঘœ ঘটছে লেখাপড়ার। শিক্ষক,শিক্ষার্থীর দাবি এই সব সংকট যেন দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করা হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,কুমিল্লা নগরী সংলগ্ন কুচাতলী এলাকার মেডিকেল কলেজের পাশে কুমিল্লা নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজের অবস্থান। এইখানে বর্তমানে চার শতাধিক শিক্ষার্থী লেখাপড়া করেন। তাদের ৯০ ভাগ ছাত্রী ও ১০ভাগ ছাত্র। ছাত্রীদের থাকার জন্য আবাসিক হোস্টেলে ৩০টি কক্ষ থাকলেও ছেলেদের কোন হোস্টেল নেই। ৩০টি কক্ষে ভালোভাবে ৬০জন থাকতে পারের। সেখানে ৩শ’ জনের বেশি গাদাগাদি করে থাকতে হচ্ছে। চারজনের কক্ষে ৮-১০জন থাকছেন। এতে পড়া ও ঘুমের পরিবেশ পাওয়া যাচ্ছে না।
শ্রেণী কক্ষ সংকটে শিক্ষার্থীরা,ক্লাস করছে পাঠাগার ও অডিটয়িামে। ল্যাবের ছোট কক্ষ ,শিক্ষার্থীদের দাঁড়ানোরও জায়গা নেই। পুরাতন ভবনের এখানে সেখানে পলেস্তারা খসে পড়ছে।
এদিকে এমএলএস দিয়ে সিকিউরিটির কাজ করানো হচ্ছে। ক্লিনার প্রয়োজন ৬জন,আছেন একজন। মালি নাই। কুক প্রয়োজন ৬জন, আছেন একজন। একজন মানুষ এতজনের খাবার রান্না করতে পারেন না।তাকে মাঝে মাঝে ছাত্রীরাও হেল্প করেন। ৪জন অফিস সহকারী প্রয়োজন। আছেন একজন। তিনিও কিছুদিনের মধ্যে অবসরে যাবেন। অবসরে যাচ্ছেন একমাত্র হাউজ কিপারও। রাজস্ব ও ডেপুটেশনে মিলিয়ে ১৪জন শিক্ষক আছে। প্রয়োজন কমপক্ষে ২০জন।
ছাত্রী মৌমিতা রানী বলেন,আমরা এক রুমে ৮জন থাকি। যদি এই রুমে চারজন থাকতাম তাহলে পড়ালেখার একটা ভালো পরিবেশ পেতাম। আমাদের নতুন হোস্টেল নির্মাণ হলে সেই দুর্ভোগ কমে যেতো।
মুসফেরা ফেরদৌস নামের আরেকজন ছাত্রী বলেন,দুইজনের রুমে চারজন দেয়া যায়। সেখানে ৮-১০জন থাকতে হচ্ছে। এতে একজন ফোনে কথা বললে অন্যজনের লেখাপড়ায় মনোযোগ বিঘ্ন ঘটে। এতে লেখাপড়া খারাপ হচ্ছে। এক রুমে বেশি মানুষ থাকায় ঘুমেরও সমস্যা হচ্ছে।
ছাত্র মো. নাহিদ বলেন,ছাত্রীদের হোস্টেল আছে আমাদের তাও নেই। বাইরে থাকতে হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা থেকে আসি। বাসাও পাই না। কারণ ব্যাচেলরদের কেউ বাসা ভাড়া দেয় না। হোস্টেল না থাকায় লেখাপাড়ার সমস্যা হচ্ছে। এদিকে ক্লাসরুম সংকট রয়েছে। একরুমে ৮০জন ক্লাস করি, তা হওয়ার কথা ৪০জন।
হাউজ কিপার শিবানী রানী ভৌমিক বলেন,৩০টি রুমে ১২০জন থাকা যায়। সেখানে ৩০০এর বেশি শিক্ষার্থী থাকছে। যদি নতুন হোস্টেল নির্মাণ হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দূর হবে।
নার্সিং ইন্সট্রাক্টর আউলিয়া খাতুন বলেন,আমাদের ল্যাবের জায়গার সংকট রয়েছে। এতে শিক্ষার্থীরা ভালোভাবে প্র্যাকটিস করতে পারছেন না। এছাড়া ল্যাবেও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংকট রয়েছে।
প্রিন্সিপাল মো. মনিরুল ইসলাম সরকার বলেন,১৯৭০সালে এই প্রতিষ্ঠানটি কুমিল্লার কান্দিরপাড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২সালে এই ক্যাম্পাসে এসেছে। আমাদের হোস্টেল ও ক্লাসরুমের সংকট রয়ছে। এছাড়া শিক্ষক, অফিস স্টাফ ও ক্লিনার সংকট রয়েছে। নতুন একাডেমিক ভবন ও হোস্টেল নির্মাণ প্রয়োজন। এবিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছি।