নগরীতে চলছে সরস্বতী প্রতিমা তৈরির কাজ

অফিস রিপোর্টার।।
সনাতন ধর্মালম্বীদের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব সরস্বতী পূজাকে কেন্দ্র করে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। ক্যাটালগের অনুকরণে প্রতিমা মূর্তি তৈরি করা হচ্ছে। মৃৎশিল্পীরা প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এখন চলছে বাঁশ, খড় ও কাদামাটি দিয়ে প্রতিমার অবকাঠামো তৈরি ও প্রলেপ দেওয়ার প্রাথমিক কাজ।
জানা যায়- হিন্দু শাস্ত্র মতে, বিদ্যার দেবী সরস্বতী। সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা দেবীর আশীর্বাদ লাভের আশায় প্রতিবছর পঞ্জিকামতে মাঘ মাসের পঞ্চমী তিথিতে সরস্বতী দেবীর পূজা করে থাকেন। এই পূজা উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে বাড়িতে নির্মাণ করা হয়েছে অস্থায়ী মন্দির। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পূজা উদ্যাপনের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলছে উৎসাহ উদ্দীপনা। তাই জেলার বিভিন্ন উপজেলার মন্দির ও বাড়িতে সরস্বতী প্রতিমার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। প্রায় প্রতি বাড়িতেই সরস্বতী পূজা হওয়ায় প্রতিমার চাহিদা রয়েছে।
নগরীর দক্ষিণ ঠাকুরপাড়াস্থ শ্রী শ্রী কালীগাছতলা কালী বেদী, শিব মন্দির ও দূর্গা মন্দিরে মৃৎশিল্পী রমেশ পালের কারখানায় গিয়ে দেখা যায়, চলছে ছোট-বড় বিভিন্ন সাইজের প্রতিমা তৈরির কাজ। মৃৎশিল্পীরা দিন-রাত পরিশ্রম করে চলেছেন।
মৃৎশিল্পী রমেশ পাল বলেন- ‘সরস্বতী পূজা উপলক্ষে প্রতিমা বানাচ্ছি। সারা বছর বিভিন্ন প্রতিমা তৈরি করি। এবার বিভিন্ন সাইজের সরস্বতী প্রতিমা তৈরি করা হচ্ছে। কিছু বায়না নেওয়া, আবার কিছু প্রতিমা বানানো থাকে। যাতে শেষ মুহূর্তে বায়না না দিয়েও প্রতিমা কিনতে পারেন পূজারিরা।’
মৃৎশিল্পী শংকর পাল বলেন- ‘ঠাকুর তৈরি ও সাজসজ্জায় যে কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তার দাম বেড়েছে। ফলে ঠাকুর তৈরির খরচ অনেকটাই বেড়েছে। যারা ঠাকুর আগে থেকে বায়না করেছেন, তাঁরা অতিরিক্ত দাম দিতে রাজি নন। অন্যদিকে, বিক্রিতে ভাটা পড়ে, তাই আমরাও ঠাকুরের দাম বাড়াতে পারছি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘শীত উপেক্ষা করে প্রতিদিন সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত প্রতিমা তৈরি ও রং করায় আমরা ব্যস্ত সময় পার করছি। কাজের চাপে দম ফেলার সময় নেই। এবার ৮০টি প্রতিমা তৈরি করেছি, যা সর্বনিম্ন এক হাজার থেকে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হবে।’
পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী অর্পিতা সরকার বলেন, প্রতিবছরই বিদ্যার জন্য দেবীর কাছে প্রার্থনা করি। এবারও দেবীর কাছে বিদ্যা, দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করবো।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কুমিল্লা জেলা শাখার আইসিটি সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস চন্দ্র সরকার বলেন, বিগত বছরের ন্যায় এবারও জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, পাড়া-মহল্লা ও বাসাবাড়িতে সরস্বতী পূজা উদ্যাপিত হবে। আশা করছি, কোনো ধরনের বাধাবিপত্তি ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে জাঁকজমক পরিবেশে পূজা সম্পন্ন হবে।
উল্লেখ্য, আসছে ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার সরস্বতী পূজা পালন করবেন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।