নগরীতে বর্ষার প্রস্তুতি

 

দেশজুড়ে চলছে টানা বর্ষণ। সিলেট-সুনামগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার ৮০ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। জলাবদ্ধ হয়েছে ঢাকা ও চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন অঞ্চল। তবে বিস্ময়কর ভাবে এবার তিনদিনের টানা বর্ষণেও কুমিল্লা নগরী উল্লেখযোগ্য জলাবদ্ধ হয়নি। অথচ গত বছরও তিন ঘন্টার বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ডুবে যেতো। সে সময় নগরীর কিছু স্থানে সড়কে নৌকাও চলেছে। এনিয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, এবার বর্ষা মোকাবেলায় ভালো প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। গত তিন মাস ধরে নগরীর ২শতাধিক ড্রেন সংস্কারের কারণে জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা কমেছে। এছাড়া বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে ড্রেন পরিষ্কার রাখতে সিটি করপোরেশন প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে। সম্প্রতি ১৫জুন সিটি নির্বাচন শেষ হয়েছে। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিকভাবে ড্রেন সংস্কারে কাজ করেছেন। তাই বড় ধরনের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়নি।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন(বাপা) কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর মাসুম বলেন, কুমিল্লা নগরীর পানি নিষ্কাশনের প্রধান খাল কান্দিখাল। নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে লাকসাম রোডের সড়কটি চারলেনে উন্নীত করার কাজ করতে গিয়ে খালটির একাংশ ভরাট করেছে। কিছু অংশ ভরাটে বর্তমানে খালটি সরু ড্রেনে পরিণত হয়েছে। এই খালের কিছু অংশ পাশের ৪০টির বেশি প্রতিষ্ঠান দখলে রেখেছে। সেই ভূমি উদ্ধার হলে খালটি প্রশ^স্ত হবে। কুমিল্লা নগরীতে সমন্বয় ও আন্তরিকতার সংকটে নাগরিক দুর্ভোগ বাড়ে। এবার জলাবদ্ধতার স্থায়িত্ব কম ছিলো। জলাবদ্ধতা দূর করতে কান্দিখাল আরো প্রশ্বস্ত ও গভীর করা দরকার। সেটি দ্রুতই করা প্রয়োজন।
সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, এবার তুলনামূলকভাবে নগরীতে কম জলাবদ্ধতা হয়েছে। তবে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের বছরের মতো সব বছরে যেন আন্তরিকভাবে ড্রেন সংস্কার কাজ করেন। তিনি আরো বলেন, জনপ্রতিনিধিদের সাথে নগরবাসীকেও দায়িত্বশীল হতে হবে। ড্রেনকে ময়লা ফেলে ডাস্টবিন বানানো যাবে না।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, গত তিন মাস ধরে নগরীর ২শতাধিক ড্রেন সংস্কার করা হয়েছে। যার কারণে জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা এবার কমেছে। এছাড়া বৃষ্টি চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্থানে ড্রেন পরিষ্কার রাখতে আমাদের কর্মীরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছেন। এদিকে কান্দিখাল সংস্কারে টেন্ডার হয়েছে। সিটি করপোরেশনের নতুন পরিষদ গঠিত হলে সেই কাজ শুরু হবে। সে সময় আমরা জেলা প্রশাসনের সহায়তায় খাল দখলকারীদের উচ্ছেদ করবো।

আমরা মনে করি,আন্তরিক উদ্যোগ নেয়া হলে সীমিত সামর্থ্য দিয়েও মানুষকে সেবা দেয়া যায়। বিশেষ করে দক্ষিণ দিকে পানি অপসারণের টমছম ব্রিজ খাল সংকুচিত হলেও সিটি করেপারেশনের কর্মী বাহিনী তৎপর থাকায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।